“তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
Published : 30 Sep 2024, 12:04 PM
“নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন কমতে শুরু করেছে। এতে কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এভাবে প্রতি বছর আমাদের ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাচ্ছে,” কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গংগচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের ছালাপাক এলাকার আজিজার মিয়া।
উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে শনিবার রাত থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রোববার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করলেও নতুন করে নদী ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা।
সেই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আজিজার মিয়ার কপালেও পড়েছে। তিনি বলছিলেন, “এবারও ফসলি চলে যাবে হয়তো নদীর পেটে। চিন্তায় আছি।”
সোমবার সকাল ৯টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা-৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান।
একই সময়ে নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ৬ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা-২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। শনিবার রাত ১১টার দিকে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
এর ফলে ফলে তিস্তার চরাঞ্চল ও বাম তীরের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়ে বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ডুবে যায় কৃষকের ফসল; ভেসে যায় পুকুরের মাছ।
গংগচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়ানের চর এলাকার রহিম উদ্দিন বলছিলেন, “শুক্রবার থেকে হঠাৎ উজানের পানি আসতে থাকে। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবার রাত থেকে পানি হু-হু করে বাড়ে। তবে এখন কমতে শুরু করেছে।”
ডালিয়া পাউবোর উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, উজানের ঢল আর বর্ষণে তিস্তায় পানির প্রবাহ বেড়েছিল। তখন তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।