রথযাত্রায় আহত ছাড়া সাধারণ রোগীদেরও খোঁজ-খবর নেন প্রতিমন্ত্রী।
Published : 08 Jul 2024, 07:39 PM
বগুড়ার জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট আহতদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা।
সোমবার বিকাল ৪টায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দেখতে গিয়ে এই আশ্বাস দেন তিনি।
বিদ্যুতে ঝলসে যাওয়া এই রোগীদের আশ্বস্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আপনারা সাহস রাখুন, আপনাদের চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে।”
এসময় রথযাত্রায় আহত ছাড়া সাধারণ রোগীদেরও খোঁজ-খবর নেন প্রতিমন্ত্রী।
পরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমার মন্ত্রীর নির্দেশে আমি দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজ নিতে এসেছি। আহতদের মধ্যে দু-একজনের অবস্থা একটু খারাপ হলেও বাকীদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত।”
উত্তরাঞ্চলের গেটওয়ে বগুড়া। বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্তু বগুড়ায় কোনো পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট নেই- এই বিষয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রক্রিয়া চলছে। প্রথমে বিভাগীয় শহরের হাসপাতাল এবং পরে জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে বার্ন ইউনিট করা হবে।”
হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আলম, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল আলম জুয়েল ও বগুড়া স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সামির হোসেন মিশু।
বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৫ জনের মৃত্যু
এর আগে রোববার সোয়া ৫টার দিকে বগুড়া জেলা শহরে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
নিহতরা হলেন- সারিয়াকান্দী উপজেলার সাহাপাড়ার বাসিন্দা বাসুদেবের স্ত্রী সবিতা (৪০), আদমদীঘি উপজেলার কন্দুগ্রাম থানার ভবানী মোহন্তের ছেলে নরেশ মোহন্ত (৬০), পুরান বগুড়ার হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা ননী কেশর সরকারের স্ত্রী অতসি রানী সরকার (৪৫), সদর উপজেলার গোহাইল মাসিন্দা এলাকার বাসিন্দা সুদেব মোহন্তের স্ত্রী রঞ্জিতা মোহন্ত (৫৫) এবং ছোট বেলঘড়িয়া এলাকার মৃত নরেন্দ্রনাথের ছেলে অলক কুমার (৪০)।
রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারী কয়েকজন জানান, যে রাস্তা দিয়ে রথটি যাচ্ছিল তার উপরের ছিল বিদ্যুতের তার। রথের মাথা বিদ্যুতের তারে লাগার সঙ্গে সঙ্গে আগুন জ্বলে ওঠে। চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। কেউ কিছু বোঝার আগেই নারী-পুরুষ-শিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় লোকজন দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে আবার তারা রথের কাছে এসে মাটিতে পড়া থাকা লোকজনকে উদ্ধার করেন। কিছু মানুষ তখন রথটি টেনে বনানী শিব মন্দিরের দিকে চলে যায়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “রথের চূড়ায় ধাতব পদার্থ ছিল। ১১ কিলোভোল্টের লাইনে লেগে বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। রথে উঠে যারা ধাতব পদার্থ ধরে ছিল তারাও আহত হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছে, এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।