অপরদিকে চুক্তি সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করে পুনর্মূল্যয়ানের দাবি জানিয়েছেন বাঙালিভিত্তিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতারা।
Published : 02 Dec 2024, 06:01 PM
এই সময়ে দেশে জঙ্গি ও মৌলবাদ ছড়িয়ে পড়ছে মন্তব্য করে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, এ কারণে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেছেন, “আমরা শান্তি চাই, আমাদের শান্তিতে থাকতে না দিলে আমাদের ব্যবস্থা আমরা নেব। নতুন সরকার আসার পর দেশে জঙ্গি ও মৌলবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা না থাকায় সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার সকালে রাঙামাটির জিমনেশিয়াম মাঠে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস নেতা এ কথা বলেন।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পাহাড়ের সংঘাত থামাতে জেএসএসের সঙ্গে চুক্তি করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। যার মধ্য দিয়ে পাহাড়ে তিন দশক ধরে চলে সহিংসতার অবসান ঘটে। এই চুক্তির অনেকগুলো ধারা ছিল। যার কিছু তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়; বাকিগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল। যদিও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি।
সমাবেশে জেএসএস নেতা ঊষাতন তালুকদার বলেন, “আমরা চুক্তির বাস্তবায়ন চাই। দেশকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র আমরা করছি না। কিন্তু দেশব্যাপী আমাদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়।
“দীর্ঘ ২৭ বছরেও পাহাড়ের ভূমি সমস্যার সমাধান হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়ন না করে উল্টো আমাদের দেশবিরোধী বলে অপপ্রচার করা হয়।”
তাই এই সরকারকে পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান ঊষাতন।
সমাবেশে জেএসএসের সহসাধারণ সম্পাদক উইন মং জলির সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন সহছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল চাকমা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শিশির চাকমা।
চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের দাবি নাগরিক পরিষদের
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করে পুনর্মূল্যয়ানের দাবি জানিয়েছেন বাঙালিভিত্তিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতারা।
সকালে রাঙামাটি শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি সাব্বির আহম্মদ বলেন, “পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছরে চারটি সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও তাদের নিজেদের মধ্যে সংর্ঘষের কারণে আশান্তিতে আছে পাহাড়ের মানুষ। ভূমি ব্যবস্থাপনার কারণে বাঙালিরা বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলন থেকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক চুক্তির ধারাগুলো সংশোধন করে পাহাড়ে নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার জন্য পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
পাশাপাশি আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার অপসারণ, পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যাহার করা নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প পুনস্থাপনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিক, পৌর কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম।