পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের প্রধান বলেন, “শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছে, তার সঙ্গে বিভাগের শিক্ষকরাও পুরোপুরি একমত।”
Published : 02 Feb 2025, 08:45 PM
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এনে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবেদনের যোগ্যতা পূরণ না করেই পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগে তাজবিউল ইসলাম নামে এক প্রভাষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বিভাগটির শিক্ষার্থী আলীমুজ্জামান শাফিন বলেন, “যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম যোগ্যতা প্রয়োজন ৩ দশমিক ৫০, সেখানে এ শিক্ষকের সিজিপিএ ৩ দশমিক ২০। অথচ ওই সময় শিক্ষক নিয়োগে আমাদের বিভাগে এর চেয়ে ভালো সিজিপিওধারী প্রার্থী ছিল।
“কিন্তু প্রশাসন কারণ হিসেবে দেখাইছে সেই ছেলে বেশি যোগ্য। যে ন্যূনতম আবেদনের যোগ্যতাই রাখে না, সে আমাদের বিভাগের প্রভাষক। এ অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে আমরা কোনোভাবেই ছাড় দিব না এবং এ অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কি এতই ছোট? যে এরকম অবৈধ নিয়োগে মাথানত করব! প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা দিতে বাধ্য হব।”
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “আমরা যদি আজ অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত তাজবিউলকে বিভাগে প্রবেশের সুযোগ করে দেই, তাহলে আগামীতে এরকম অসংখ্য তাজবিউলের জন্ম হবে। এরকম তাজবিউলরা কোন ধরনের শিক্ষা প্রদান করবে, কোন ধরনের শিক্ষার্থী তৈরি করবে, তা আমাদের বুঝা হয়ে গেছে।”
“এ বিষয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, এখনো কেন সে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় নাই? এটি অতিসত্বর প্রকাশ করতে হবে। এ অযোগ্য তাজবিউল যেন ক্যাম্পাসে ঢুকতে না, তা আমাদেরকেই সুনিশ্চিত করতে হবে।”
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম, সৈয়দ মো. আসিফ আবরার, মুহয়ী শারদ, সুস্মিতা ছাফা, জামাদুজ্জাম সানি।
এছাড়া অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ‘তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ কর, নইলে ডিপার্টমেন্ট বন্ধ কর’; ‘শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, মানি না- মানব না’; ‘যোগ্যরা শিক্ষক হবে, দুর্নীতিবাজরা পিছু হটবে’; ‘আবেদন করার যোগ্যতা নাই, নিয়োগ পায় কীভাবে’; ‘তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশে দেরি কেন? প্রশাসন জবাব দাও’; ‘যোগ্যতার কদর চাই, অনিয়মের বিচার চাই’; ‘শিক্ষক হবে নৈতিক, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নয়’; অবিলম্বে এ নিয়োগ বাতিল করতে হবে ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিভাগের শিক্ষকরা নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের সব তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করেছি। এতে দেখা যাচ্ছে যে, ৩ দশমিক ৫০ গড় সিজিপিএ-এর শর্ত পূরণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছে, তার সঙ্গে বিভাগের শিক্ষকরাও পুরোপরি একমত।”