মুহুরী নদীর বানে ফেনী জেলা যে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, ইতিহাসে তার নজির নেই। সম্পদ যা গেছে, তা গেছে; এ জেলার তিন উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষ এখন প্রাণ বাঁচানো নিয়েই শঙ্কায়।
Published : 23 Aug 2024, 01:46 AM
বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়ে এসে বাংলাদেশ যে আরেক দফা বন্যার কবলে পড়তে পারে, অগাস্টের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসেই তা জানা গিয়েছিল। কিন্তু সেই বন্যা যে এমন প্রলয়ঙ্করী রূপ নিয়ে আবির্ভূত হবে, তা কল্পনাও করেনি ফেনী জেলার মানুষ।
উজানে অতি ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক এ বন্যায় একদিনের ব্যবধানে দেশের অন্তত ১০ জেলা প্লাবিত হয়েছে। এসব জেলায় প্রায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৩৬ লাখের বেশি মানুষ। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কিন্তু মুহুরী নদীর বানে ফেনী জেলা যে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে, ইতিহাসে তার নজির নেই। সম্পদ যা গেছে, তা গেছে; এ জেলার চার উপজেলার চার লাখ মানুষ এখন প্রাণ বাঁচানো নিয়েই শঙ্কায়।
ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ, নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। বেশিরভাগ এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফোনেও যোগাযোগ করতে না পেরে উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় আছেন অন্য জেলায় থাকা স্বজনরা।
আর এমন এক সময় প্রকৃতির এমন রূদ্রমূর্তি বাংলাদেশকে দেখতে হচ্ছে, যখন ৩৬ দিনের গণ আন্দোলন আর সহিংতায় সরকার পতনের ধাক্কা সামলে দেশকে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
যাত্রা শুরুর দুই সপ্তাহের মাথায় এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার দ্রুতই তৎপরতা দেখিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার উপদেষ্টা পরিষদকে নিয়ে বৈঠক করে বন্যা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
বুধবার বন্যার শুরু থেকেই প্রতিবেশী দেশ ভারতকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশ ভেসে যাচ্ছে অভিযোগ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছে।
ভারতও আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ত্রিপুরার ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হচ্ছে– বিষয়টি ‘তথ্যগতভাবে সঠিক নয়’।
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বন্যার এই ভয়াবহতার কারণ বোঝার চেষ্টা করেছে। তারা প্রধানত অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টিকেই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “বাংলাদেশ যেমন বৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরাতেও বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। যার একটা প্রভাব বাংলাদেশে এসে পড়ছে।”
কতটা ভয়ঙ্কর
দুর্গত পাঁচ জেলার মধ্যে ফেনীর পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। মুহুরী নদী উপচে বুধবারই ভেসে গিয়েছিল জেলার অনেক এলাকা, বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে।
ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৫০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পরশুরামের মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যা কবলিত।
বন্যা মোকাবিলা: ভারতের সঙ্গে 'উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা' চান ইউনূস
বন্যা মোকাবেলায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় বানের পানি মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালও ডুবিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ফেনী সদর ও অপর তিন উপজেলার বিদ্যুত সরবরাহ ঠিক হয়নি। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় অচল হয়ে পড়েছে প্রায় অর্ধেক মোবাইল টাওয়ার। তাতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ মানুষ।
জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলা সদর ও তিনটি উপজেলা পুরোপুরি বন্যাকবলিত। এছাড়া দাগনভূইয়া ও সোনাগাজী উপজেলা আংশিকভাবে বন্যাকবলিত।
“এসব এলাকার চার লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।সেখানে বিশুদ্ধ পানি ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।”
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় এবং পানির প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বানভাসি মানুষের বাঁচার আকুতি প্রবল হয়ে উঠেছে।
ফেনী সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াইপুরের বাসিন্দা জহিরুল হক জানান, তার এলাকায় তিন ফুট উচ্চতার পানিতে তলিয়ে গেছে। বুধবার বেলা দুইটা থেকে এখন পর্যন্ত শহরের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই।
“শহরের নিচু এলাকার লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে গেছে। তবে পাকা ভবনের লোকজন ছাদে বা দোতলায় আশ্রয় নিয়েছেন।”
পরশুরামের মির্জানগর এলাকা থেকে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ফেনী শহরের স্টেশন রোডের একটি হোটেলে এসে উঠেছেন ইসমাইল হোসেন।
তিনি বলেন, “রাতভর আতঙ্ক, মানুষের আর্তি আর বন্যার প্রবল বিধ্বংসী রূপ দেখেছি। প্রাণ বাঁচাতে ভিটেমাটি ছেড়ে সামান্য কয়েকটি কাপড়চোপড় সম্বল করে বাড়ি থেকে বের হতে বাধ্য হয়েছি।”
স্থানীয়রা জানান, জুলাই মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি বেড়ে ১৫ স্থানে ভাঙে। সেসব স্থানে জোড়াতালির মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১১ স্থানে ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয় ১০০টির বেশি গ্রাম।
যেখানে অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মাছের ক্ষতি ছাড়িয়ে যায় ৩০ কোটি টাকার বেশি। সেই ক্ষতি না পোষাতেই ১৫ দিনের মাথায় আবার বন্যা।
গত বন্যায় ভেঙে যাওয়া ২৬টির সঙ্গে এবার নতুন করে আরও একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এবারের বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ কয়েশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ফেনীর বাইরে থাকা অসংখ্য মানুষ তাদের স্বজনদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বন্যায় আটকে পড়া স্বজনদের উদ্ধার করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। সেখানে প্রকাশ পেয়েছে স্বজনদের উদ্ধারে তাদের আকুতি।
ছাগলনাইয়া উপজেলায় আটকে পড়া বন্ধুর পরিবারের খোঁজ পেতে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জাহান ই গুলশান।
তিনি লিখেছেন, “জরুরি উদ্ধারকারী চাই। ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রাইমারি স্কুলের পাশে পানিবন্দি আমার বন্ধুর পরিবার। উদ্ধারকারীরা আসুন প্লিজ।”
কুমিল্লায় বন্যা ও বৃষ্টির মধ্যে একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, একজনের মাথায় গাছ পড়ে এবং একজন পানিতে তলিয়ে মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী অংশের কিছু স্থানে প্রায় কোমড় সমান পানি উঠে গেছে। এর ফলে ঢাকামুখী যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। দেখা দিয়ে দীর্ঘ যানজট।
যাত্রীরা বলেছেন, তারা ভয়ানক বিপদের মধ্যে পড়েছেন। যেখানে বাস থেমে আছে, সেখানে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। আশপাশে কোথাও কোনো খাবারের দোকান নেই। বাস থেকেও নামতে পারছেন না। ফলে কখন তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন সেটাও বুঝতে পারছেন না।
চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও হবিগঞ্জে রেলপথ ডুবে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ও সিলেটের পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
চার দিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে চাঁদপুর জেলার ৩১টি ইউনিয়নে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় দুই দিন ধরে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকার বাসিন্দারা। পানিবন্দি শত শত পরিবার খাবারের কষ্টের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু নিয়ে দুর্বিষহ দিন পার করছেন।
বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যার কথা 'সঠিক নয়': ভারত
আট জেলায় বানভাসি ২৯ লাখ মানুষ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার হাওরা নদীর বাঁধের দুইটি স্থানে ভেঙে গেছে। এতে করে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আখাউড়া ও কসবা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। আখাউড়ায় পানিবন্দি হয়ে আছে ১২ শতাধিক পরিবার। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ আছে।
মৌলভীবাজারের মনু, কুশিয়ারা, জুড়ি ও ধলাইসহ সবকটি নদনদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধলই নদীর একাধিক বাঁধ ভেঙে কমলগঞ্জের ইসলামপুর, আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম তলিয়ে গেছে। এছাড়া রাজনগর উপজেলার ভাংঙ্গার হাটে বাঁধ ও কদমহাটায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি ওঠার পাশাপাশি জেলার মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ, রাজনগর, জুড়ি, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে পাকা আউশ ধান ও রোপা আমন ধানের ক্ষেত।
বুধবার রাতভর মৌলভীবাজার শহরের বেড়িবাঁধে বালি ভর্তি বস্তা দিয়ে শহর রক্ষার চেষ্টা করেছেন কয়েকশত স্বেচ্ছাসেবী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় নতুন করে আরও অন্তত পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৪০টি গ্রামের হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর দিনযাপন করছেন।
উপজেলার বীরচন্দ্রপুর গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে সুবর্ণা আক্তার নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়েছে।বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই উপজেলায় ২০ হাজারের বেশি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ফটিকছড়ি কৃষি অফিস জানিয়েছে, টানা বৃষ্টি ও বন্যায় উপজেলায় ১৪ হাজার ৫৮০ হেক্টর আমন ধানের চারা, ৫০ হেক্টর বীজ তলা, ৮৫০ হেক্টর আউশ ও ৩৫০ হেক্টর শরৎকালীন সবজির জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ফটিকছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। হালদা নদী উপচে বিভিন্ন পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে।
সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগও বন্ধ আছে। রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির বহু এলাকা। পানি প্রবেশ করছে মেরুং ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রে। প্লাবিত হয়েছে দীঘিনালার তিন ইউনিয়নের ৫০ গ্রাম।
মাইনী নদীর পানি বাড়তে থাকায় ডুবে গেছে জেলার বিভিন্ন সড়ক, কৃষি জমি ও পুকুর। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
পৌর শহরের বাসিন্দা আরাফুলত ইসলাম বলেন, “এতো পানি গত ১০ বছরেও দেখি নাই। শহরের মধ্যে সাধারণত পানি উঠে না। এবার শহরের প্রধান সড়কগুলোও ডুবে গেছে।”
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে মোট ১ হাজার ৮১০ জনকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন।
দুর্গত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, ডাক বিভাগ, কৃষিসহ বিভিন্ন দপ্তরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, “প্রথমত মানুষের জীবন বাঁচানো। এখনকার পরিস্থিতি হচ্ছে, সবার আগে মানুষের জীবন রক্ষা করা। সেখানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যাদের বন্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় অভিজ্ঞতা আছে, তারা কাজ করছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করে তাদেরকে নিয়োজিত করা হয়েছে।”
বৃষ্টিপাত কমে পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনর্বাসন শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলা |
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার সংখ্যা |
ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের সংখ্যা |
পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা |
ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা |
কুমিল্লা |
১২ |
১২৪ |
১৫৪৬৬১ |
১৮৯৬০০ |
ফেনী |
৬ |
১৫ |
|
৩০০০০০ |
চট্টগ্রাম |
৯ |
৯৩ |
৪৫৯১৬ |
২০৪৮৫০ |
খাগড়াছড়ি |
৮ |
২৭ |
৩৩৫২২ |
১১০৭১৮ |
নোয়াখালী |
৮ |
৮৬ |
১৮৪৯০০ |
১৯৮০০০০ |
মৌলভীবাজার |
৭ |
৪৭ |
৩৬৭১১ |
১৫২৪২৫ |
হবিগঞ্জ |
৫ |
২২ |
৮২৪০ |
৩৩৪৬৮ |
ব্রাহ্মণবাড়িয়া |
২ |
৮ |
১১৯০ |
৪৯৯১ |
সিলেট |
৩ |
১৫ |
|
৬৫০০০ |
লক্ষীপুর |
৫ |
৫৮ |
১২০৯০০ |
৬০৪৫০০ |
১০ |
৬৫ |
৪৯৫ |
৫৮৬০৪০ |
৩৬৪৫৫৫২ |
এই ভয়াবহতা কেন?
জুলাই-অগাস্টে মাসে বাংলাদেশে বন্যা নতুন কিছু নয়। তবে এবার যেসব জেলায় বন্যা হয়েছে, সেসব এলাকার পরিস্থিতি সাধারণত এতটা খারাপ কখনো হয় না।
আবার এত দ্রুত পরিস্থিতি এতটা খারাপও সাধারণত হয় না। এবারের বন্যায় পানি এত দ্রুত বেড়েছে যে অনেক এলাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ারও সময় পায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজানে যে বৃষ্টি গত কয়েক দিন ধরে হচ্ছে তা স্বাভাবিক নয় মোটেও। ১৯ অগাস্ট থেকে ২১ অগাস্ট পর্যন্ত ত্রিপুরায় অতি ভারি বর্ষণ হয়েছে। অন্তত ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টিপাত আরও অব্যাহত থাকার আভাস রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ তৈরি হয়েছে, সেটি গত তিন থেকে চার দিন বাংলাদেশের উপরে ছিল। এখনো কিছুটা বিরাজ করছে।
“গত কয়েক বছর ধরে লঘুচাপ সাধারণত বাংলাদেশের উপর দিয়ে যায় না; আরও নিচ দিয়ে যায়। এবার বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাচ্ছে এবং মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বাংলাদেশের উপর থাকছে, যার ফলে এমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। লঘুচাপটা এমন এক জায়গায় বসে আছে, যার ফলে সাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প আসছে চট্টগ্রাম দিয়ে। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বাতাসও আসছে। যতক্ষণ পর্যন্ত লঘুচাপটি দুর্বল না হবে ততক্ষণ বৃষ্টি হতে থাকবে।”
বাংলাদেশের মত ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরাতেও বেশি বৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এর প্রভাব বাংলাদেশে এসে পড়ছে। পানি যাবার মূল জায়গাটাতো বাংলাদেশ। প্রচণ্ড বেগে এই পানি আসছে, যা সামনে পাচ্ছে ভাসিয়ে নিয়ে যাবার মত অবস্থা হচ্ছে।”
সমরেন্দ্র কর্মকার বলেন, ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, মেঘলা অববাহিকায় ১৯৮৮, ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যা হলেও কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী এলাকায় এবারের মত পরিস্থিতি কখনো হয়নি।
বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মাসফিকুস সালেহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই তিন দিনের ভারি বৃষ্টির কারণেই এ ভয়াবহ বন্যা তৈরি হয়েছে।
“আমাদের এখানেওতো প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছে, উজান থেকে পানি আসে- যেসব জায়গায় পানি জমতে পারত, আমরা যখন সেসব জায়গা ভরাট করে ফেলছি, তারমানে তো পানি আরও বেশি জায়গায় ছড়াচ্ছে। আমরা তো ওভাবে পরিকল্পনা করতে পারিনি। ফেনী এবং মুহুরী নদী এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। লঘুচাপের প্রভাবটা এখানেই পড়েছে।”
ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত বাংলাদেশে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ আকস্মিক বন্যা তৈরি করেছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধ্যাপক মাসফিকুস বলেন, “ফেনী নদীতে কোনো ড্যাম নেই; একটি ড্যাম আছে গোমতি নদীতে। সেটিও ১২০ মিটার উপরে, যার ক্যাপাসিটিও অনেক কম। ফলে বাধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে দ্রুত পানি নেমে আসার তথ্যটি ভুল।
বন্যা-বৃষ্টি: কুমিল্লায় ৩ জনের মৃত্যুর খবর
ভারত বাঁধ খুলেছে কি না, যোগাযোগ করছে সরকার
“কারণ এটার জন্য যে প্রভাব পড়বে, সেটা খুব ধীরে ধীরে হবে। বৃষ্টির পানিটা যখন খুব দ্রুত নদীর কাছে চলে আসে, ওইটার কারণেই পানি অনেক বেড়েছে। আর যেসব জায়গায় ব্যারেজ আছে, সবগুলোর গেইট খোলা। কারণ বর্ষার সময় উপর থেকে এত পানি আসে যার কারণে এগুলো বন্ধ রাখা যায় না। এই বন্যার জন্য মূলত দায়ী বৃষ্টি।”
মাসফিকুস সালেহীন বলছেন, “বন্যা মোকাবেলা করতে হলে বৃষ্টিটাকে অন্তত তিন/চারদিন আগে পূর্বাভাস করতে হবে। তাহলে অনেক ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও যৌথ নদীর কমিশনের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ত্রিপুরা বেসিনে যে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে; তার জন্য খোয়াই, হাওড়া, গোমতী, মুহুরী, ফেনী নদীর ওপর প্রভাব পড়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশেও ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এ সব কিছু মিলিয়ে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, মৌলভীবাজারসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা হচ্ছে।
“ভারতের সাথে আমাদের নদীর ডেটা শেয়ারিং হয় প্রায় ১৪টি স্টেশনে। এরমধ্যে একটা স্টেশন আছে গোমতীতে অমরপুর। সেখানকার ওয়াটার লেভেলটা আমরা জানতে পারি। সেটা আমাদের বন্যা পূর্বাভাসে কাজে লাগে। ত্রিপুরা বেসিনে এবারের বন্যাটা অস্বাভাবিক। সাবসটেনশিয়ালি বাংলাদেশেও এরকম বৃষ্টি হচ্ছে। এ দুটো মিলিয়ে এবারের বন্যাটা ভয়াবহ হয়েছে।”
সরকারের প্রস্তুতি
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকারের কি করণীয়, ভুক্তভোগীদের জন্য কী করা হবে, সরকারের মধ্যে কি করে সমন্বয় করা হবে; এমন বন্যার কারণ কী; ভবিষ্যতে এ রকম বন্যা এড়িয়ে চলতে কী করতে হবে- এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
“আমরা শুনছি-উজানে অনেক বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্লাস আমাদের বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোয়ও অনেক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ধরনের ফ্লাশ ফ্লাডগুলোর ক্ষেত্রে কী ধরনের আগাম সতর্কতা আমরা পেতে পারি, আমাদের আগাম সতর্ক করা হয়েছিল কিনা, ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে রাষ্ট্রগুলো কীভাবে কাজ করতে পারে, কী সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারে- এ ব্যাপারে কথা বলতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সাথে ভারতীয় হাই কমিশনারের একটি বৈঠক রয়েছে।”
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি-উজানের পানি বাংলাদেশে ধেয়ে এসে এ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করছে। কোনো ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে এ যে বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে; এটির মাধ্যমে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে এবং বাংলাদেশের সাথে অসহযোগিতা করছে।”
এ উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ভেতরে কোনো টানাপড়ের যাতে না রাখা হয় এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভারত-বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক যাতে প্রতিস্থাপন করা হয়।
ভারত কী বলছে?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়াকে বন্যার কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভও হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়াকে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কারণ হিসাবে বর্ণনা করে বাংলাদেশে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা আমরা দেখেছি। এটা তথ্যগতভাবে সঠিক নয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতে গোমতী নদীর সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাঁধের ভাটি এলাকার পানির কারণে বাংলাদেশের বন্যা হয়েছে।
“২১ অগাস্ট থেকে পুরো ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ব্যাপক অন্তঃপ্রবাহের কারণে পানি নিজে থেকে বের হওয়ার ঘটনা দেখা গেছে।”
বাংলাদেশ থেকে উজানে ১২০ কিলোমিটার নদীপথে তিনটি পানির পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থাকার কথা বলা হয়েছে বিবৃতিতে। যার মধ্যে অমরপুর স্টেশন থেকে দ্বিপক্ষীয় প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশকে বন্যার হালনাগাদ তথ্য দেওয়া হয়।
“পানি বৃদ্ধি পাওয়ার উর্ধ্বমুখী প্রবণতার তথ্য ২১ অগাস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় বন্যার কারণে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হয়।”
এ পরিস্থিতিতে জরুরি তথ্য আদানপ্রদানের জন্য অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে যোগাযোগ চালু রাখার চেষ্টা করার কথা বলেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পূর্বাভাস
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাত কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্যাটার কারণ মৌসুমি লঘুচাপজনিত ভারি বৃষ্টিপাত; একই সঙ্গে সাগরে জোয়ারের উচ্চতা বেশি। যার কারণে পানি পুরোপুরি নিচে নামতে পারে নাই। শুক্রবার পানি কমতে পারে, পরশু দিনের মধ্যে অনেক জায়গার পানি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।”
আর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
পুরনো খবর:
তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে: সতর্কীকরণ কেন্দ্র
বন্যায় চরম বিপর্যয়ের মুখে খাগড়াছড়ি, ডুবেছে আশ্রয়কেন্দ্রও