গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ; এ বছর ৭ দশমিক ২২ শতাংশ কম পাস করেছে।
Published : 15 Oct 2024, 06:07 PM
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষায় এবার অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় ফলাফল খারাপ হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সারাদেশে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ হলেও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী।
তুলনামূলক এই খারাপ ফলাফলের জন্য জুলাই-অগাস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করে বিষয় ম্যাপিংয়ে মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণের প্রভাব দেখছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
এই অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগাযোগ বাড়িয়ে আগামীতে ফলাফল ভালো করার কথা জানিয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে খুব একটা ভালো করতে পারেনি।
“তবে আমরা হতাশ নই। ঘুরে দাঁড়াব অবশ্যই। প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি ক্লাসে মনোনিবেশ বাড়াতে হবে।”
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৭৭ হাজার ৬২১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। পাস করেছে ৪৯ হাজার ৬৯ জন। ফেল করেছে ২৮ হাজার ৫৫২ জন শিক্ষার্থী।
২৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান শতভাগ কৃতকার্য এবং চারটি প্রতিষ্ঠান শতভাগ অকৃতকার্য হয়েছে।
জিপিএ ৫ পেয়েছে চার হাজার ৮২৬ জন। এর মধ্যে ছেলেদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ হাজার ১০৯ জন এবং মেয়েরা পেয়েছে ২ হাজার ৭১৭ জন। পাসের হার এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে এবারও মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে।
গত বছর এই বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ বছর ৭ দশমিক ২২ শতাংশ কম পাস করেছে।
ফলাফলের ব্যাপারে জানতে চাইলে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের শিক্ষার্থী ফারহানা সামীয়া বলেন, “আমাদের কলেজ বরাবরের মতো এবারও ভালো ফলাফল করেছে। পাসের হার প্রায় ৯৮ শতাংশ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছি আমরা ৭৪০ জন।
“তবে কিছুটা খারাপ লাগছে বোর্ডে পাসের হার কমেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে সব বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হওয়া।”
আনন্দ মোহন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফায়াজ ফারদিন বলেন, “আমাদের কলেজ এ বছর ফলাফলে খারাপ করেছে, যেটা আমরা প্রত্যাশা করিনি। তবে আন্দোলনের মুহূর্তে পড়াশোনায় আমরা মনোনিবেশ করতে পারিনি। যার কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে।”
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যাপক এনায়েতুর রহমান বলেন, এ বছর কলেজ থেকে ১২৭২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১২৪২ জন পাস করে। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৭৪০ জন শিক্ষার্থী।
“সাফল্যের এ ধারা আমরা সবসময় ধরে রাখার চেষ্টা করছি।”
আনন্দ মোহন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ বলেন, “এ বছর আমাদের ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। বেশি খারাপ করেছে কমার্স ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ১০৬৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৯১৭ জন পাস করেছে। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪৬৪ জন শিক্ষার্থী।”
এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ।