বরিশালে এক মেয়র প্রার্থীর রক্তাক্ত হওয়ার পরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলা যাবে কি না এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “রক্তাক্ত সব কিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন?”
Published : 12 Jun 2023, 07:21 PM
বরিশাল-খুলনা সিটি করপোরেশনসহ দুই পৌরসভায় ‘আনন্দমুখর’ পরিবেশে ভোট হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
দু’চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিকভাবে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ এ ভোটে খুলনায় গড়ে মেয়র পদে প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং বরিশালে গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পড়তে পারে বলে তারা ধারণা করছেন। পৌরসভা দুটিতে ভোটের এ হার হতে পারে ৫৫ শতাংশ।
সোমবার ভোট শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় একজন মেয়র প্রার্থীকে রক্তাক্ত করা হলেও এ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলা যায় কি না?- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, “এটা আপেক্ষিক। রক্তাক্ত সব কিছু আপেক্ষিক, উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা দেখেছি-না, উনি কি কতটা… উনার রক্তক্ষরণটা দেখিনি। যতটা শুনেছি-উনাকে কেউ পেছন থেকে ঘুষি মেরেছে। উনিও বলেছেন, ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, তাকে আক্রমণ করা হয়েছে।”
বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীর ওপর এ হামলার ঘটনার পর নির্বাচন শেষে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে বিষয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিইসি বলেন, দু’চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিকভাবে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন এবং কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভায় ভোট হয়। সেসব এলাকার ভোট পরিস্থিতি ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করে কমিশন।
সিইসি বলেন, “যেটা দেখেছি- আমরা সন্তুষ্ট বোধ করছি। সার্বিকভাবে নির্বাচনটা আজকে হয়েছে তা বেশ সুশৃঙ্খল, আন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে। গণমাধ্যমসহ সবখানে ইতিবাচক সংবাদ পেয়েছি। দু’চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক।”
ভোটে অনিয়ম ও কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ‘ডাকাতে’র উপস্থিতির মতো কোনো ঘটনা দেখা যায়নি বলে জানান তিনি।
বিএনপি ও সমমনা দল ভোটে না থাকায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবার ভোট নিয়ে তুলনামূলক শঙ্কা ছিল কম।
উত্তেজনা বরিশালে, বিশৃঙ্খলারোধে প্রস্তুত আইন শৃঙ্খলাবাহিনী
বরিশালে মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, শুনেছি-বরিশালে হাতপাখার প্রার্থীকে খানিকটা আঘাত করা হয়েছে। এতে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল বা সে উত্তেজনা এখনও হয়ত প্রশমিত হয়নি। এখান থেকে বলা হয়েছে- এ ধরনের আশঙ্কা থেকে নির্বাচনোত্তর যেন সহিংসতা না ঘটে, কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ যেন না হয়। অনেক সময় ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরে এ ধরনের ঘটনা ঘটে- সে প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।”
এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সর্বাত্মক প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি আশা রাখেন, হয়ত আর কোনো ঘটনা ঘটবে না।
মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার খবর জানার পরপরই ভোট কার্যক্রম ওই কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি না কমিশন সঙ্গে সঙ্গে তা খোঁজ নিয়েছে দেখেছে তাতে ভোট বাধাগ্রস্ত হয়নি, বলে উল্লেখ করেন সিইসি।
“উনাকে (মেয়র প্রার্থী) যে আহত করা হয়েছে, এখান থেকে সুস্পষ্টভাবে পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যে দায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায় দায়িত্ব নিরূপণ করার পরে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আরও তথ্য পরবর্তীতে পাব। দায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে।”