সোনারগাঁওয়ে হেফাজতের সহিংসতায় আরও ৩ মামলা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টে নারীসহ হেফাজত নেতাকে ঘেরাওয়ের পর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2021, 06:38 PM
Updated : 9 April 2021, 07:12 PM

বৃহস্পতিবার রাতে একটি ও শুক্রবার দুপুরে দুটি মামলা দায়ের করা হয় বলে সোনারগাঁও থানার এসআই ইয়াউর রহমান জানান।

এই ঘটনায় এ নিয়ে ছয়টি মামলা হয়েছে, যার দুইটিতে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে আসামি করা হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির বাবা শাহ জামাল তোতা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি মামলা করেন বৃহস্পতিবার রাতে।

সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক নাছির উদ্দিন দুটি মামলা করেন শুক্রবার দুপুরে।

এসআই ইয়াউর রহমান জানান, গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগে তার বাবা শাহ জামাল তোতার মামলায় সাত জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়।

“এই মামলায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী খালেদ সাইফুল্লাহ সাইফ, কাজী সমির ও অহিদকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।”

শুক্রবার বিকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এসআই ইয়াউর জানান।

ইয়াউর বলেন, সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে ১২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার তিনি নিজে মামলা করেছেন। 

একই দিনে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় সোনারগাঁও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক নাছিরউদ্দিন বাদী অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ১১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় নাছির উদ্দিনের করা মামলায় মামুনুল হককে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

সোনারগাঁও থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট মামলা হলো ছয়টি।  

ওসি জানান, এর আগে মামুনুলকাণ্ডে পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি ও সাংবাদিককে মারধর ঘটনায় একটি মামলা হয়। ওই তিন মামলায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়।

পুলিশের একটি মামলা মামুনুল হককে প্রধান আসামি করা হয়েছে বলেও জানিয়ে ওসি বলেন, এজহারভুক্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের এক রুমে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করে স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার অনুসারীরা ওই রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালিয়ে তাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।

পরে হেফাজতের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। ভাংচুর করে শতাধিক যানবাহন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ও ভাংচুর করেছে।

পুলিশ তাদেরকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ৪ শতাধিক শর্টগান ও টিয়ারশেল ছুড়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।