টাঙ্গাইলে এক ইউনিয়নে ২ হাজার পরিবার ‘ত্রাণ পায়নি’

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের চারটি গ্রামে প্রায় দুই হাজার দরিদ্র পরিবার সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায়নি বলে দাবি করেছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 03:00 PM
Updated : 25 April 2020, 03:19 PM

করোনাভাইরাসে প্রায় অচল হয়ে পড়া দেশে এসব কর্মহীন শ্রমজীবীদের ‘খেয়ে-না খেয়ে’ দিন কাটছে বলে জানিয়েছেন তাদের অনেকে।

এদের বেশিরভাগই জেলে, কাঠমিস্ক্রি, দিনমজুর ও ভ্যানচালক।

হত দরিদ্র বৃদ্ধ আল্লাদি বেগম জানান, তার স্বামী  দিনমজুর। এখন তার কাজ না থাকায়  ‘ঘরে কোনো চাল নেই।’

“ছেলে মেয়েদের মুখে কী খাবার দেব তা নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।”

ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যানরা তাদের নাম লিখে নিয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সহযোযিতা পাইনি। তাদের কাছে গেলে তারা বলে আমরা কোনো ত্রাণ সমাগ্রী পাইনি, সরকারিভাবে বরাদ্ধ আসলে সবাইকে দেওয়া হবে।”

জানা গেছে, দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের আবাদপুর, দড়িপাড়া, বারপাখিয়া ও গাছকুমুল্লীর হতদরিদ্র পরিবারে কোনো সরকারি ত্রাণ সহায়তা এসে পৌঁছেনি।

এলাকাবাসী জানান, খেয়ে-না খেয়ে কোনোভাবে কষ্টে দিন পার করেছেন তারা। করোনাভাইরাসে নয় ‘কাজ না করলে তারা না খেয়েই মরে যাবে’ বলছেন তারা।

একজন জানালেন, ছোট ছোট শিশুদের দুধ খাওয়াতে পারছেন না। দুধ ছাড়া সুজি খাওয়ানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহিম তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, ত্রাণের জন্য তার ওয়ার্ডের হতদরিদ্রদের নামের তালিকা করে চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া হয়েছে।

“মেম্বার হিসেবে এখন পর্যন্ত আমি কোনো ত্রাণ সামগ্রী পাইনি। কাউকে কিছু দিতে পারেনি।”

এসব দরিদ্র পবিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারে কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

সংরক্ষিত মহিলা সদস্য লাকী ভূইয়া জানান, এলাসিন ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের জেলে, কুমার, ঋসি সম্প্রদায়সহ আরও অন্যান্য পেশার প্রায় দুই হাজার হতদরিদ্র লোক বাস করেন। এ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে তারা এখন বেকার।

“কাজ না পেয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো পরিবারই সরকারি ত্রাণ সহায়তা পায়নি।

“বিশেষ করে নদী ভাঙন কবলিত এলাকা গাছকুমুল্লীর প্রায় দেড়শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করেছে। তারা আমাদের দিকে চেয়ে আছে। আমরা না পেলে তাদের কোথায় থেকে দেব?” 

এ বিষয়ে এলাসিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, “নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আমরা পাচ্ছি-তা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বরাদ্দ করা হবে।

“যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-দেশে তিন বছরের খাবার মজুদ রয়েছে। কাজেই খাবারের কোনো ঘারতি হবে না। আপনারা একটু ধর্য্য ধারণ করুন। হতদরিদ্র সব শ্রেণি-পেশার লোকদের সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হবে।

“স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু আমাকে আশ্বস্ত করেছেন পর্যাপ্ত সরকারি বরাদ্দ রয়েছে ত্রাণের কোনো অভাব হবে না।”

স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু ত্রাণ না পাওয়া এসব অভিযোগ মানতে নারাজ।

তিনি বলেন, “এক হাজার ৯০টা পরিবার কোনো না কোন ভাবে সুবিধা পেয়েছেন।”

তারপরেও যদি কেউ খাবার না পেয়ে থাকে তাহলে তার নিজস্ব পরিকল্পনায় যে হটলাইল চালু করা আছে তাতে ফোন করা মাত্র তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে বললেন এই সংসদ সদস্য।