মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত আরও ৪

সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে তিন জেলায় আরও চারজন গুলিতে নিহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2018, 06:33 AM
Updated : 6 June 2018, 04:48 AM

এর মধ্যে রংপুর ও বগুড়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুজন। আর ময়মনসিংহে দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়ে পুলিশ বলেছে, তাদের মৃত্যু হয়েছে মাদক চোরাকারবারিদের নিজেদের দ্বন্দ্বে।

এছাড়া দিনাজপুরে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের দুই ঘটনায় পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান ‍শুরুর পর থেকে অন্তত ১২৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে পুলিশ বা র‌্যাবের গুলিতে। 

অভিযানে মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে গুলি করায় পাল্টা গুলি চালাচ্ছে পুলিশ বা র‌্যাব, তাতে ঘটছে মৃত্যু।

কয়েকটি ক্ষেত্রে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের মৃত্যু হয়েছে মাদক চোরাকারবারিদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে।

তাদের ওই বক্তব্য ও ঘটনার বিবরণ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রশ্ন তুলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বন্দুকযুদ্ধে নিহতের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চেয়েছে। আর জাতিসংঘ বলেছে, তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

এর মধ্যে বড় দাগ হয়ে দেখা দিয়েছে টেকনাফে ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের মৃত্যু। তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তার প্রমাণ হিসেবে একটি অডিও টেপও তুলে ধরা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।

তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, দেশ থেকে মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চলবে।

মাদকবিরোধী অভিযানে ‘নজর’ রাখছে জাতিসংঘ

‘এমন মৃত্যু কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়’

মাদকবিরোধী অভিযান: তদন্ত চায় ইইউ মিশনগুলো  

একরামের মৃত্যু: ভয়ঙ্কর অডিওতে ‘অশনি সংকেত’  

অভিযানে নিহতে বার্নিকাটের উদ্বেগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস  

মাদকবিরোধী অভিযানে সমর্থন, প্রশ্ন বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যু নিয়ে  

মাদক নির্মূলে অভিযান চলবে: প্রধানমন্ত্রী  

রংপুর

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দকযুদ্ধে দবির হোসেন (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

সোমবার রাত ৩টার দিকে হারাগাছা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রংপুর-হারাগাছ সড়কের ছোটপুলের কাছে গোলাগুলি এ ঘটনা ঘটে বলে কাউনিয়া থানার ওসি মামুন অর রশীদ জানান।

ওই পৌরসভার ৫ পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের চ্যাংটারী গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেনের ছেলে দবিরের নামে কাউনিয়া থানায় দশটি মাদক মামলা রয়েছে ওসির ভাষ্য।

রংপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়োন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছোটপুলের কাছে মাদক কেনাবেচার খবরে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি করলে ঘটনাস্থলেই দবিরের মৃত্যু হয়।”

পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন,  ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় পিস্তল, তিনটি ছোরা, ১২৬টি ইয়াবা ও ১৪৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

বগুড়া

বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে লিটন ওরফে রিগ্যান (৩২) নামে এক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন বলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানিয়েছেন।

তিনি বলছেন, মঙ্গলবার রাত সোয়া ২টার দিকে শহরতলীর মাটিডালি এলাকায় ওই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

রিগ্যান বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মাদক আইনের পাঁচটি মামলা রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা সনাতন বলেন, “একদল মাদক বিক্রেতা মাটিডালি কমার্স কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মাদক কেনাবেচা করছে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পালটা গুলি করে। গোলাগুলি থামার পর রিগ্যানকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”

তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর পৌনে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানান সনাতন।  

তিনি বলছেন, ঘটনাস্থল থেকে দুটি চাপাতি এবং রিগ্যানের শরীরে তল্লাশি চালিয়ে ২০০ ইয়াবা পাওয়া গেছে। এ অভিযানে দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে; যারা মাদক মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শহরের কেওয়াটখালী রেল সেতুর নিচ থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয় বলে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান।

নিহতরা হলেন- মুন্না মিয়া (৩০) ও ইদ্রিস আলী (৪৫)। এর মধ্যে মুন্নার নামে ১২টি মাদক মামলা এবং ইদ্রিসের নামে আটটি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানালেও কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে- সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ওসি।

তিনি বলেন, স্থানীয়রা রেলসেতুর নিচে দুটি লাশ দেখে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

দিনাজপুর

দিনাজপুরে ‘গোলাগুলির’ দুই ঘটনায় পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লুৎফর রহমান ও আফতাব উদ্দিন নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

মঙ্গলবার ভোরে হাকিমপুর উপজেলায় এবং সোমবার গভীর রাতে সদর উপজেলায় গোলাগুলির ঘটনায় তারা আহত হন বলে পুলিশের ভাষ্য।  

আহত লুৎফর সদরের তানিয়া গ্রামের এনামুলের ছেলে ও আলাউদ্দিন হাকিমপুরের মধ্য বাসুদেবপুর গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে। তাদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি রেদওয়ানুর রহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাত আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার গোদাগাড়ি এলাকায় ‘দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর’ মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। 

“পরে ঘটনাস্থল থেকে লুৎফরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ফেনসিডিলও উদ্ধার করা হয়।”

হাকিমপুর থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ভোরে হাকিমপুরের হিলির চুড়িপট্টি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আলাউদ্দিনের পায়ে গুলি লাগে।

পরে ঘটনাস্থল থেকে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকেও বেশ কিছু ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন ওসি।

মাদকবিরোধী অভিযানে আরও ১১ লাশ

মাদকবিরোধী অভিযান: নিহত আরও ১০ জন

মাদকবিরোধী অভিযানে আরও ৯ জন গুলিতে নিহত

মাদকবিরোধী অভিযানে গুলিতে নিহত আরও ১১ জন

বন্দুকযুদ্ধ’ চলছেই, এক রাতে নিহত ৯

কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৬ জন নিহত

‘বন্দুকযুদ্ধ’ অব্যাহত, গুলিতে নিহত আরও ১২

মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত কাউন্সিলরসহ আরও ১১

মাদকবিরোধী অভিযানে ৯ জেলায় আরও ১২ জন নিহত

মাদকবিরোধী অভিযানে নিহতের সংখ্যা শত ছাড়াল

মাদকবিরোধী অভিযানে ঢাকায় তিনজনসহ নিহত আরও ১৪

মাদকবিরোধী অভিযান: নিহতের তালিকায় আরও ২

মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত আরও ৩

মাদকবিরোধী অভিযানে কুমিল্লায় নিহত ১

মাদকবিরোধী অভিযান: নিহত আরও দুইজন