শুক্রবার রাতে কুমিল্লায় অভিযানে নিহত এই একজনকে নিয়ে গত ১৪ দিনে নিহতের সংখ্যা ১২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
কুমিল্লার ঘটনাটি ঘটেছে চৌদ্দগ্রামে; পুলিশের দাবি, অভিযানের সময় গোলাগুলিতে সাদ্দাম হোসেন (৩৬) নামে ওই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। সাদ্দাম চৌদ্দগ্রামের ভাটবাড়ি গ্রামের আবুল হাশেম ওরফে কাশেমের ছেলে।
অভিযানে মৃত্যুর ক্ষেত্রে অধিকাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে গুলি করায় পাল্টা গুলি চালাচ্ছে পুলিশ বা র্যাব, তাতে ঘটছে মৃত্যু।
কয়েকটি ক্ষেত্রে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের মৃত্যু হয়েছে মাদক চোরাকারবারিদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে।
তাদের ওই বক্তব্য ও ঘটনার বিবরণ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রশ্ন তোলার মধ্যেও অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
তবে তার মধ্যে বড় দাগ হয়ে দেখা দিয়েছে টেকনাফে ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের মৃত্যু। তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তার প্রমাণ হিসেবে একটি অডিও টেপও তুলে ধরা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. আবুল ফয়সাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার রাত সোয়া ২টার দিকে কড়ইবন এলাকায় মাদক উদ্ধারে অভিযানে গেলে সাদ্দাম মারা যান।
“উপজেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ও তার সহযোগীরা কড়ইবন দিয়ে মাদক পাচারকালে পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা চালায়। মাদক কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি করে। পুলিশ আত্মরক্ষায় পাল্টা ১৪ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয় পক্ষের গুলিবিনিময়ে মাদক কারবারি সাদ্দাম গুরুতর আহত হয়।”
গুলিবিদ্ধ সাদ্দামকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
‘গোলাগুলিতে’ ওসি ফয়সাল ছাড়াও অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া অতিরিক্ত এসপি মো. সাইফুল ইসলাম, এএসআই সারোয়ার ও কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন আহত হন বলে পুলিশের ভাষ্য।
ঘটনাস্থল থেকে ২০০ বোতল ফেন্সিডিল, তিনটি কার্তুজ ও একটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি ফয়সাল।
পুলিশ জানিয়েছে, সাদ্দামের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন থানায় মাদক আইনে ১২টি মামলা রয়েছে।
এদিকে বালুতুবা এলাকায় আরেক অভিযানে সোহাগ ওরফে কারফু (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এবং তার সহযোগী আরমানকে প্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সোহাগ ওরফে কারফু কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ চর্থার থিরাপুকুরপাড় এলাকার সামছু মিয়ার ছেলে।
কোতোয়ালি থানার ওসি আবু সালাম মিয়া বলেন, রাত ১টায় পুলিশ জেলা শহরের বালুতুপা ময়লাখিল এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায়।
“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি করলে নগরের চিহ্নিত মাদক কারবারি সোহাগ ওরফে কারফু গুলিবিদ্ধ হন। তার সহযোগী আরমানকে আটক করা হয়।”
সোহাগকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় সাতটি মামলা রয়েছে।
ওসি সালাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ২টি ছোরা ও মাদক জব্দ করা হয়েছে।