কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছিল। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও ছিল।
শনিবার সকালে পাইকপাড়া কবরস্থানের পাশের একটি তিন তলা বাড়িতে পুলিশের অভিযানে নিহত অন্য দুজনের মধ্যে একজন যশোরের কলেজ ছাত্র ফজলে রাব্বি বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুপুরে এক কর্মকর্তা বলেন, তাদের মধ্যে একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করছেন তারা।
ভোরে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলার পর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে এক ঘণ্টার ‘হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’ অভিযানের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক জঙ্গিনেতা তামিমসহ তিনজন নিহতের খবর নিশ্চিত করেন।
অভিযান শুরুর আগে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছিল জানিয়ে তারা বলেন, তাতে সাড়া না দিয়ে উল্টো জঙ্গিরা গুলি ও গ্রেনেড ছুড়েছিল পুলিশকে লক্ষ্য করে।
সন্ত্রাসবাদ দমনে পুলিশের গঠিত নতুন শাখা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং সোয়াট, স্থানীয় পুলিশ ও র্যাবের এই অভিযানের সময় ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল।
অভিযান শেষে ওই বাড়ির মালিক নুরুউদ্দিন দেওয়ান এবং তার স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ ১০ জন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।
তামিমসহ তিনজনের লাশ বিকালে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে তাদের লাশ রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
অভিযানের সময় ঢুকতে দেওয়া হয়নি কাউকে
অভিযানের পর পড়ে আছে তামিমের মৃতদেহ
২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর থেকে নিখোঁজ তামিম বাংলাদেশেই ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন। তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন। ওই আস্তানায় তামিমও কিছু দিন ছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন।
সম্প্রতি গ্রেপ্তার এক জঙ্গির কাছে নারায়ণগঞ্জের এই আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায় বলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল জানান। তারপরই সেখানে অভিযান হয়।
যেভাবে অভিযান
ভোরে পাইকপাড়ার বাড়িটি ঘিরে ফেলার পর নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় বলেন, “ঢাকা থেকে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাইকপাড়ার একটি বাড়ি ঘিরে এই অভিযান চালাচ্ছে।”
তখন যোগাযোগ করা হলে সন্ত্রাস দমনে গঠিত ডিএমপির এই শাখার প্রধান মনিরুল বলেন, “জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে এই আস্তানার খোঁজ মেলে। এখানে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং’ চলছে।”
এরপর অভিযানে র্যাব ও জেলা পুলিশ সদস্যদেরও যোগ দিতে দেখা যায়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলির শব্দ আসতে থাকে।
তিন তলা এই বাড়িতে চলে অভিযান
সেখানে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন তখন সাংবাদিকদের বলেন, “ভবনটির ভেতরে ঢুকতে অভিযান শুরু হয়েছে।”
প্রচুর গোলাগুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আশপাশের ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির পর শব্দ কমে আসে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে থাকা তামিমসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন অভিযানে থাকা ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন।
খানিক পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুলও তিনজনের মধ্যে তামিমের থাকার খবর খবর নিশ্চিত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাকি দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অভিযান শেষ হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানালেও পাইকপাড়ার ওই এলাকা বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঘিরে রাখা ছিল। সেখানে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
অভিযানের সময় ভবনে জঙ্গি ছাড়া আর কেউ ছিল কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ প্রধান শহীদুল বলেন, “আমরা তো এই তিনজন ছাড়া আর কাউকে পাইনি।
“অপারেশন শুরুর আগে আমরা নিশ্চিত হয়েছি জঙ্গি ছাড়া আর কোনো পুরুষ, নারী কিংবা শিশু রয়েছে কি না। নিশ্চিত হওয়ার পরেই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।”
আত্মসমর্পণের প্রস্তাবে ‘সাড়া মেলেনি’
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “তাদের সারেন্ডার করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে গ্রেনেড এবং গুলির মাধ্যমে তারা তাদের আত্মপ্রকাশ করেছিল।
ওই বাড়িতে লাশের পাশে পাওয়া গিয়েছিল চাপাতিও
“পুলিশ এবং সোয়াট বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে পরে ফায়ার ওপেন করে।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হকও সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গিরা ‘আক্রমণাত্মক’ ছিল।
“আমি তাদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দিয়েছিলাম। তাদের বলা হয়েছিল, তারা যেন হাত উঁচু করে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ তাদেরকে স্যারেন্ডার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগ তারা গ্রহণ না করে পুলিশের দিকে ৪-৫টি গ্রেনেড ছোড়ে ও গুলি চালায়। পুলিশ বাধ্য হয়ে অ্যাকশনে গেছে।”
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে।”
তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক।
ব্যাপক গুলি ‘ছুড়েছিল’ জঙ্গিরা
অভিযানে থাকা অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জঙ্গিরা প্রচুর গুলি ছুড়ছিল, কল্যাণপুরের চেয়েও এখানে গুলি ছুড়েছিল বেশি। তারা ছয়টি গ্রেনেড ছুড়েছিল।”
তিনি জানান, দুটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়েছে, দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় বাড়িটিতে ছিল, দুটি পাশের বাড়ির চালে পাওয়া গেছে।
আইজিপি বলেন, “আমাদের যারা স্নাইপার ছিল, তারা পাশের বিল্ডিং থেকে ফায়ার করেছে।
ওই ঘরে থাকা নানা সরঞ্জাম
“মূল অপারেশন হয়েছে এক ঘণ্টা। অপারেশন শেষে আমরা ভেতরে ঢুকে দেখতে পাই তিনজন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের চেহারা তামিম চৌধুরীর যে ছবি আমাদের কাছে আছে, তার সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এতে স্পষ্ট সে তামিম চৌধুরীই হবে।”
তিনজনই কি পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছেন- জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, “অভিযান চালিয়েছে পুলিশ, তো পুলিশের গুলিতে মারা যাবে না তো কি আপনার গুলিতে মারা যাবে?”
গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছানোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিন তলার ঘরের দরজার কাছে দুজনের লাশ পড়েছিল, তামিমের লাশ ছিল ঘরের ভেতরে। তামিমের কাছে গ্রেনেড এবং বাকি দুজনের একজনের কাছে এ কে-২২ রাইফেল এবং পিস্তল ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের পর চারটি গ্রেনেড ঘটনাস্থলেই নিষ্ক্রিয় করা হয়।
একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ’
নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে জেএমবি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে নিহতদের এদের একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেউ বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছানোয়ার।
ভেতর থেকে ছোড়া গ্রেনেড
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানও সাংবাদিকদের বলেন, “মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী এই অভিযানে নিহত হয়েছে এবং তার সঙ্গে তার দুই সহযোগী… তাদের পরিচয় আমরা ইনভেস্টিগেশনের পরে জানাব। আমরা মনে করি, তামিম চৌধুরীর সবচেয়ে বড় সহযোগী এখানে নিহত হয়েছে।”
রাতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম নিহতদের একজন যশোরের নিখোঁজ কলেজছাত্র ফজলে রাব্বি বলে জানালেও অন্যজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
তামিমের সঙ্গে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের জন্যও। জিয়া আরেক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহর নেতৃত্বে রয়েছেন বলে পুলিশের দাবি।
এছাড়া গুলশান হামলার আরেক ‘হোতা’হিসেবে নুরুল ইসলাম মারজানের নাম বলছে পুলিশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রও জেএমবির নেতা বলে পুলিশের দাবি।
এদের ধরতে অভিযান চললেও এখনও সফল হয়নি পুলিশ। এই দুজনের কেউ তামিমের সঙ্গে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কি না, তা পুলিশ এখনও নিশ্চিত করেনি।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেছিলেন, মারজান পুলিশের ‘নেটওয়ার্কের’ মধ্যে রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “তামিম চৌধুরীর চ্যাপ্টার এখানে শেষ হয়েছে। বাকি যে জঙ্গিরা রয়েছে তাদের আমরা শিগগিরই ধরতে পারব।”
এক মাস আগে বাড়ি ভাড়া
গুলশান হামলার পর কল্যাণপুরে যে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নয়জন নিহত হন, সেখানেও তামিম কিছু দিন ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছিল। তারপর এই মাসের শুরুতে নারায়ণগঞ্জের আস্তানাটি ভাড়া করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানায়।
সেই বাড়িটি
আইজিপি বলেন, “কল্যাণপুরের ঘটনার পরে ওষুধ ব্যবসায়ীর পরিচয়ে তারা এই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। প্রায় এক মাস আগে তারা এই বাসাটি ভাড়া নেয় বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
তিনি বলেন, “আমরা ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে খবর পাই, তামিম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে ডিএমপির সিটি ইউনিট ও সোয়াট টিমসহ এখানে আমরা অভিযানে আসি। লোকাল পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ, সিটি ইউনিট ও সোয়াট এই অপারেশন করে।”
কানাডা থেকে বাংলাদেশে জঙ্গিত্বে
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম এসেছিল।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।
তামিম আহমেদ চৌধুরী
তবে আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন।
তামিম সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য।
তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে কানাডায় পাড়ি জমান।
কানাডার পাসপোর্টধারী তামিম ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে গত ২ অগাস্ট জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল।
শহীদুল বলেন, “তামিম চৌধুরী সিরিয়াতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল। গুলশান হামলা, শোলাকিয়ার ঘটনাসহ যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবগুলো তামিমের নেতৃত্বে নিউ জেএমবি ঘটিয়েছে।”
“আমরা মনে করি, তামিম চৌধুরীর চ্যাপ্টার এখানে শেষ হয়েছে। বাকি যে জঙ্গিরা রয়েছে তাদের আমরা শিগগিরই ধরতে পারব,” বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।