তামিমের লাশ নেবে না পরিবার, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ

গুলশানে জঙ্গি হামলার ‘হোতা’ তামিম আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুতে সিলেটে তার পৈত্রিক বাড়ির এলাকা ‘কলঙ্কমুক্ত’ হয়েছে বলে মনে করছে তার পরিবার।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2016, 03:54 PM
Updated : 27 August 2016, 08:32 PM

পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তার মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয়রা।

শনিবার বিকালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বড়গ্রামে তামিমদের বাড়ি গিয়ে কোনো পুরুষ সদস্যকে পাওয়া যায়নি। কয়েকজন নারী থাকলেও তামিম সম্পর্কে তেমন কিছু বলেননি।

তামিমের চাচী আঙ্গুরা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তামিমের মৃত্যুর মধ্যমে আমাদের পরিবার কলঙ্ক মুক্ত হলো। এলাকার লোকদের কাছে আমরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারিনি এতদিন। পুলিশ, র‌্যাব, সিআইডি, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মিডিয়া ফোনে আমাদের পরিবারের সদস্যদের ঘুম হারাম ছিল।”

তিনি জানান, তামিম কখন কবে দেশে এসেছে এটা তাদের জানা নেই। তিনি কোনোদিন তামিমকে দেখেননি। তাদের পরিবারের কারও সঙ্গে তামিমের পরিবারের যোগযোগ ছিল না।

তামিমের লাশ আনতে পরিবারের কেউ যাবে না বলে জানান আঙ্গুরা খাতুন।

বাড়িতে তামিমের তিন চাচা থাকতেন। তাদের মধ্যে ফখরুল ইসলাম মারা গেছেন দুই বছর আগে। গত রোববার মারা যান তার আরেক চাচা নজরুল ইসলাম। অপর চাচা নুরুল ইসলাম বেঁচে আছেন। তবে তাকে ওই সময় বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

এলাকাবাসী জানান, তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে পাড়ি জমান কানাডায়। সেখানেই তামিম বেড়ে ওঠে।

তবে তার ‘জঙ্গি’ সংশ্লিষ্টতার শুরু কীভাবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই কারো কাছে।

এদিকে, তামিমের মৃত্যুর সংবাদে এলাকার লোকজন মিষ্টি বিতরণ করেছে।

বড়গ্রামের বাসিন্দা মিসবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “তামিম সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। পত্রপত্রিকায় দেখেছি সে জঙ্গি মদদদাতা। আমাদের গ্রামের এই ছেলেটি ধর্মের নামে মানুষ হত্যায় জড়িত ছিল শুনে আমরা লজ্জিত। এমন দেশদ্রোহী জঙ্গির মরদেহ গ্রামে দাফন হোক তা আমরা চাই না “

তামিমের প্রতিবেশি নাজমুল ইসলাম দুলাল বলেন, তামিম ‘জঙ্গিবাদে’ জড়িয়ে গোটা এলাকার বদনাম করেছে। তার মরদেহ এ গ্রামে কিছুতেই দাফন করতে দেওয়া হবে না।

দুবাগ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, “পাঁচ বছর আগে কানাডা থেকে তামিম আহমদ চৌধুরী নিখোঁজ হন বলে এলাকাবাসীর মুখে শুনেছি। এরপর পরিবারের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই বলেই জানে এলাকার লোকজন।

“তার মৃত্যুতে পরিবারসহ এলাকার লোকজন খুশি। অনেক স্থানে মিষ্টিও বিতরণ করা হয়েছে।”