পটুয়াখালীতে এমপির উপস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম

বাউফল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2023, 01:34 PM
Updated : 17 March 2023, 01:34 PM

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীতে দলের প্রতিপক্ষের হামলায় রক্তাক্ত জখম হয়েছেন বাউফল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার। 

বাউফল থানার ওসি আল-মামুন জানান, শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আবদুল মোতালেব হাওলাদার এবং সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষে তিনিসহ [ওসি আল-মামুন] অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। 

বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ ছয়জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

অন্যদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। আহত সবার নাম পরিচয় জানা যায়নি। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে যান। 

এ সময় আ স ম ফিরোজের পক্ষের নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে জনতা ভবনের সামনে অবস্থান নেন। 

অন্যদিকে পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষের লোকজনও উপজেলার কাছাকাছি অবস্থান নেন। 

এক পর্যায়ে মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকরা উপজেলা চত্বরে ঢুকতে চাইলে তিন পক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদার তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে পুলিশ। 

পরে মোতালেব হাওলাদার জনতা ভবনের দিকে এগিয়ে যেতেই আ স ম ফিরোজের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের মধ্যে মোতালেব হাওলাদারসহ তার বেশকিছু নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। 

ওসি আল-মামুন বলেন, সংঘর্ষে ইটের আঘাতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনিসহ পুলিশের আরও পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। 

“পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে লাঠিচার্জ করে ব্যর্থ হলে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।” 

বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনই কোনো কিছু বলতে পারব না।”

উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার গুরুতর আহত হওয়ায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংঘর্ষ বলতে যা বুঝায়, সে রকম কিছু হয়নি। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী এসেছে। একটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা এবং নিউজ করার জন্যই বোধ হয় আজকের এই ঘটনা।” 

ঘটনার সময় তিনি পিছনে ছিলেন জানিয়ে বলেন, “ওরা উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে ছিল। আমি কিছু জানি না, যারা জানে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন। 

“কিছু লোক আঘাত পাইছে শুনেছি। আমি এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। শুনেছি একজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর একজনের গায়ে ছররা গুলি লেগেছে।”