বৈসাবি উপলক্ষে শহরের নিউজিল্যান্ড মাঠে দুই সপ্তাহব্যাপী মেলা বসেছে; যেখানে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার ও খাবার পাওয়া যাচ্ছে।
Published : 08 Apr 2025, 02:13 PM
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়েছে। এতে ফুটে উঠেছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।
নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরের বিদায় উপলক্ষ্যে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের চেঙ্গী স্কয়ার থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিঝু, সাংগ্রাই বৈসু-সাংগ্রাই-চাংক্রান-বিজু-বিহু-বিষু-পাতা উপলক্ষে শোভাযাত্রায় আয়োজন করে সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটি।
বছর ঘুরে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বাসিত স্থানীয়রা। শোভাযাত্রাটি নিউজিল্যান্ড মাঠে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে ত্রিপুরাদের গরিয়া নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া অন্বেষা তালকুদার বলেন, কয়েদিক দিন পরেই আমাদের ফুলি বিজু। তার আগে আগাম শোভাযাত্রা বের হয়েছে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন বয়সি মানুষ অংশ নিয়েছেন।
বৈসাবি উপলক্ষ্যে দুই সপ্তাহব্যাপী নিউজিল্যান্ড মাঠে মেলা বসেছে। মেলায় নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অলংকার ও খাবার পাওয়া যাচ্ছে।
মেলায় অংশ নেওয়া মারমা তরুণী উইলিপ্রু মারমা বলেন, “শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বন্ধুরা মিলে অংশ নিয়েছি। আমরা ট্রাকে করে গান করেছি। অনেক মানুষ অংশ নিয়েছে। খুবই কালারফুল একটা প্রোগ্রাম হয়েছে।”
নিজেদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি স্বকীয়তা রক্ষায় এমন উদ্যোগ প্রতিবছরই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
‘সার্বজনীন বৈ-সা-বি উদযাপন কমিটি’র সমন্বয়ক ভুলাস ত্রিপুরা বলেন, নিজেদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য এই আয়োজন। শোভাযাত্রায় এক হাজার ৫০০ এর বেশি মানুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সাঁওতালরা অংশ নিয়েছে।
এ ছাড়া শোভাযাত্রাকে বর্ণিল করতে বান্দরবানের মুরং শিল্পীরাও অংশ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের নিউজিল্যান্ডের সবুজ মাঠে বসেছে মেলা; যা আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে বলে জানান ভুলাস ত্রিপুরা।
বৈসাবি উপলক্ষে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি না ঘটে, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “বৈসাবি উপলক্ষে মেলা, শোভাযাত্রা, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাসহ বিভিন্ন আয়োজন শুরু হয়েছে। পুলিশ বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। আশা করি আমরা ভালোভাবে আয়োজন শেষ করতে পারব।”