নোয়াখালীর হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তারুণ্যের গণসাবেশে নুরুল হক নুর এই প্রতিক্রিয়া দেখান।
Published : 03 Nov 2024, 12:11 AM
নোয়াখালীতে বক্তব্যের সময় লোডশেডিং হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টাকে ‘জবাবদিহিতার আওতায় আনার’ কথা বলেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত তারুণ্যের গণসাবেশে নুর এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। এ সময় নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ বিকালের দিকে শুরু হয়। নুরের আগে বেশ কয়েকজন বক্তব্য দেন। বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে নূর বক্তব্য দেওয়ার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যায়।
তখন বিরক্ত হয়ে নুর হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
ঠিক তখন গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় একজন নেতা মঞ্চ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগে মোবাইল করে ক্ষোভ করেন যে, চিঠি দেওয়ার পরও কেন ভিআইপি লাইনে বিদ্যুৎ চলে গেল? কথা বলতে বলতেই ৫টা ২০ মিনিটের দিকে আবার বিদ্যুৎ চলে আসে। তখন নুর আবার মাইকে এসে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।
লোডশেডিং প্রসঙ্গ টেনে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, “এখন আমার পাশের নেতারা বলছেন, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ লাইন, এখানের বিদ্যুৎ যায় না। মনে হয় কেউ বিঘ্ন ঘটিয়েছে। স্পষ্টতই এতক্ষণ বক্তব্য চলেছে। কিন্তু যেইমাত্র আমি বক্তব্য দেওয়া শুরু করলাম তখন বিদ্যুৎটা চলে গিয়েছে, এটার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
“সেই সময়ে এই বিদ্যুতের লাইন চলে যাওয়া স্পষ্টতই পরিকল্পিত একটা ঘটনা বলে আমরা মনে করি। আমি বলবো, আমাদের নেতৃবৃন্দকে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার জন্য জবাবদিহি করা, তারা কোন নব্য ফ্যাসিবাদের দোসর সেটি চিহ্নিত করতে হবে।”
তিনি বলেন, “তারা কাদেরকে সুযোগ দেওয়ার জন্য কিংবা গণঅধিকার পরিষদের এই সমাবেশকে পণ্ড করার জন্য এই বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করেছে সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টাকে এজন্য ঢাকায় গিয়ে জবাবদিহিতার আওতায় আনবো।”
গণঅধিকার পরিষদের নেতা বলেন, “উদীয়মান নেতৃত্বকে ভয় পায়। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃসময়ে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের জন্ম হয়েছে। আমাদের ভয় দেখাতে আসবেন না। বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গণজোয়ার রুখা যাবে না।”
তিনি বলেন, “আমাদের কথা পরিষ্কার, নোয়াখালীর এই গণজোয়ারই প্রমাণ করে মানুষ গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্বে আগামীর নতুন সরকার গঠন করার জন্য, নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য মুখিয়ে আছে।”
নুরুল হক নূরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুল বাহার বলেন, “গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তাদের সমাবেশস্থলে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ৫টার কিছুক্ষণ পরে সমাবেশ শেষ হয়ে গেছে মনে করে অন্যত্র লোডশেডিং কমানোর জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে হরিনারায়পুর বিদ্যালয় এলাকায় লোডশিডিং দেওয়া হয়।
“কেউ সমাবেশ শেষ হয়নি জানালে অবশ্যই আরো পরে লোডশেডিং দেওয়া হতো। সমাবেশস্থল থেকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।”