সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
Published : 18 Apr 2025, 10:13 AM
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েটের) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা চত্বরে জড়ো হন। এরপর সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান গেটের কাছে গিয়ে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিলে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রাতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ ব্যাচের রাহাতুল ইসলাম, ১৯ ব্যাচের শেখ জাহিদ ও একই ব্যাচের শিক্ষার্থী গালিব রাহাত। তারা বলেন, উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, কতিপয় শিক্ষকরা ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়াচ্ছেন।
কিন্তু ছাত্রদের এই আন্দোলন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে।
যে ৩৭ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরব ভূমিকা নিয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।