Published : 28 Feb 2024, 06:40 PM
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভোক্তা সিন্ডিকেট গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার বন্ধে’ আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।
সফিকুজ্জামান বলেন, “প্রসাধনী থেকে শুরু করে এমন কোনো পণ্য নেই যেটি বাংলাদেশে নকল হয় না। এমনকি মেয়াদোত্তীর্ণ হার্টের রিং এবং বাল্ব বিক্রি হচ্ছে। কী অদ্ভুত একটা দেশ! দ্রুত ধনী হওয়ার আশায় এই কাজগুলো করা হচ্ছে। অথচ যিনি সততার সঙ্গে ব্যবসা করতে চান তিনি টিকে থাকতে পারেন না।
“এগুলো বন্ধের জন্য বিভিন্ন আইন আছে, সরকারি দপ্তর আছে, প্রশাসন আছে; কিন্তু প্রতিটি পদে পদে এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা। জনমত তৈরি করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভোক্তার সিন্ডিকেট দরকার।”
মশার কয়েলও নকল করা হয় জানিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “নারায়ণগঞ্জে এক অভিযানে প্রতিষ্ঠিত একটি ব্র্যান্ডের চিনি ও লবণ নকল প্যাকেটে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। এগুলো অহরহ হচ্ছে, এইটা হচ্ছে বাস্তবতা।”
দেশে হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৫০০ মানুষকে হার্টের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু প্রতিদিন ঢাকা সিটিতে হার্টের রোগী আসে পাঁচ থেকে ১০ হাজার। ধূমপান ছাড়াও অনিরাপদ তেল ব্যবহার এর অন্যতম কারণ।
সবচেয়ে বেশি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বাংলাদেশে বিক্রি হয়; কেউ গবেষণা করলে এমনটাই পাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি।
বাজারমূল্যের চেয়ে কমদামে গরুর মাংস বিক্রি করা ব্যবসায়ীর কথা উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, “খলিল যখন মাংসের দাম ৫৯৫ টাকায় বিক্রি শুরু করল, তখন মাংসের দাম ৮০০ থেকে নেমে ৬৫০ হয়ে গেল। তখন খলিলকে ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেওয়া হয়।
“মাংসে তো খলিল বিপ্লব ঘটিয়েছে, তাকে আমরা প্রশংসিত করেছি। কিন্তু তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আর কম দামে মাংস বিক্রি করায় রাজশাহীতে খুনও করা হয়েছে। এই বাস্তবতায় আমরা আছি।”
খাদ্যপণ্যের ব্যবসা পাঁচ থেকে ছয়টি কর্পোরেট গ্রুপের হাতে চলে গেছে; যারা চাইলে দেশে খাদ্যপণ্যের সংকট তৈরি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১ মার্চ থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সারাদেশে খোলা তেল বিক্রি বন্ধে অভিযানে নামবে বলে জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে এতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে এই কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।