“এখন আগুনের যে ধরন দেখছি তাতে ভয়ের কিছু নেই। আগুন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
Published : 23 Mar 2025, 10:27 AM
সুন্দরবনে লাগা আগুন থেমে থেমে জ্বলছে। আগুনের বিস্তৃতি রোধে ফায়ার লাইন কেটে (মাটি কেটে বিচ্ছিন্ন করা) বনবিভাগের নিজস্ব সেচপাম্প দিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চালানো হচ্ছে।
রোববার সকাল থেকে আগুন অনেকটাই ‘নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে বলে বনবিভাগ থেকে দাবি করা হয়েছে।
তবে আগুনের বিস্তৃতি বনের কতটা এলাকায় ছড়িয়েছে এবং আগুন কিভাবে লাগল তা এখনও জানাতে পারেনি বনবিভাগ।
শনিবার বেলা ১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর কলমতেজি টহল ফাঁড়ি এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখাতে পায় বনকর্মীরা। খবর পেয়ে বনের গহীনে লাগা এ আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, “আগুনের বড় কোনো শিখা নেই, আছে শুধু ধোঁয়া। ফায়ার লাইন কেটে (মাটি কেটে বিচ্ছিন্ন করা) আমাদের নিজস্ব সেচপাম্প দিয়ে আগুন নেভাচ্ছি। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত আমরা আগুন নেভানোর কাজ করেছি।
“যেখানেই ধোঁয়ার কুণ্ডুলি দেখতে পাচ্ছি সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। এখন আগুনের যে ধরন দেখছি, তাতে ভয়ের কিছু নেই। আগুন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এদিকে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুন্দরবনের গহীনে আগুন, পানির উৎস ‘৩ কিলোমিটার দূরে’
কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দাস ও কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে কমিটিকে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও বনভূমির ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দিপন চন্দ্র দাস জানান।
বনবিভাগের নিজস্ব সেচপাম্প দিয়ে পানি ছিটানোর কাজ শুরুর পর আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দারও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বাগেরহাট, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জের মোট পাঁচটি ইউনিট সুন্দরবন সংলগ্ন মরা ভোলা নদীর তীরে অবস্থান করছে। আমরা পাইপ লাইন বসিয়ে আগুনের স্থলে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। সুন্দরবনের যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখান থেকে মরা ভোলা নদীর দূরত্ব অন্তত তিন কিলোমিটার। এতো দূরত্বে পানি নিয়ে তা দিয়ে আগুন নেভাতে দারুন বেগ পেতে হচ্ছে।”
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলছেন, “আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে অসাবধনতাবশত জেলে, বাওয়ালী বা মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
গত বছর ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় আগুন লাগে। তাতে বনের পাঁচ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।