“উনার বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলা থাকায় তাকে সিলেট কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।”
Published : 17 Sep 2024, 11:44 AM
পাসপোর্ট আইনে ভারতে ‘অনুপ্রবেশের চেষ্টা’র অভিযোগে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে জানিয়েছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. জমশেদ আলী।
তিনি বলেন, “শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আইনজীবী আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
“তবে উনার বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলা থাকায় তাকে সিলেট কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে সোচ্চার এই সাবেক বিচারপতি বিভিন্ন সময়ে তার মন্তব্যের জন্য আলোচিত ছিলেন। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিল না।
পরে ২৩ অগাস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।
পরদিন সিলেটের বিচারিক হাকিম আলমগীর হোসেন বিচারপতি মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে পাসপোর্ট আইনে ভারতে ‘অনুপ্রবেশের চেষ্টা’র অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করে।
তবে ওইদিন বিকালে আদালতে তোলার সময় আলোচিত এই বিচারপতিকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করে।
এ ছাড়া পুলিশ প্রহরায় আদালতের সিঁড়িতে ওঠার আগে কয়েকজন যুবক কিল-ঘুষি ও পেছন থেকে টেনে ধরে আঘাত করেন। এ সময় তার কাপড়ে রক্তের দাগও দেখা যায়।
ওইদিন রাতেই সাবেক বিচারপতি মানিককে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার একটি অস্ত্রোপচার হয়। গত বৃহস্পতিবার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
১৯৭৮ সালে হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন জীবন শুরু করা শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে তাকে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারক করে নেয় সরকার। কিন্তু পরে বিএনপি সরকার এসে তাকে বাদ দেয়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাই কোর্টের একটি রায়ে বিচারকের আসনে ফেরেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক করা হয়।
২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে বার বার শিরোনাম হয়েছেন বিচারপতি মানিক। সে সময় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন।
অবসরের পর তাকে নিয়মিত টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে দেখা যেত। বরাবরই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ‘আপত্তিকর মন্তব্য করার’ অভিযোগেও বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে ঢাকা ও নোয়াখালীতে দুটি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বিচারপতি মানিক সিলেট সীমান্তে গ্রেপ্তার
সীমান্তে আটক হওয়ার পর যা বললেন বিচারপতি মানিক