পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গেল মাতারবাড়ীর প্রথম ইউনিট

“আগামী ডিসেম্বরে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষণমূলক উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।”

কক্সবাজারের মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে এই ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় বলে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন মজুমদার জানান।

তিনি বলেন, “মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্টের দুইটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটিতে পরীক্ষামূলক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। বিকাল থেকে এর উৎপাদন ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে। ”

প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, “এই ইউনিটটির উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াটের হলেও প্রাথমিকভাবে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এ জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডেই সরবরাহ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী ডিসেম্বরে মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। সেটিতেও পরীক্ষামূলক উৎপাদনে ১২৫ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে “

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ডিসেম্বরে ইউনিটটির নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ”

তিনি বলেন, “পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ উৎপাদন চলবে।”

“প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, আগামী বছরের মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।”

২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র। জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার সহায়তার প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোর কাজ ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর কাজ হয়েছে ৯০ শতাংশ।

সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটে প্রতিদিন ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে। ৭ অগাস্ট ৬৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ মাতারবাড়ীর জেটিতে ভিড়বে।

জাহাজ থেকে সরাসরি কয়লা আনলোড করার জন্য দুটি জেটির পাশাপাশি ১ দশমিক সাত মিলিয়ন টন ধারণক্ষমতার চারটি ট্যাংক নির্মিত হয়েছে। এতে ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে।

আরও পড়ুন:

শনিবার পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছে মাতারবাড়ীর প্রথম ইউনিট

মাতারবাড়ীর বিদ্যুৎ আসা শুরু ডিসেম্বরেই

বিদ্যুৎকেন্দ্র: বড় হচ্ছে মাতারবাড়ি বন্দর-নগর, ব্যয় বাড়ল ১৬০০০ কোটি টাকা

মাতারবাড়ীতে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার জাহাজ

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়িতে

মাতারবাড়িতে কাজ এগোচ্ছে; দৃশ্যমান ‘দেড় বছরেই’