তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, জানিয়েছে তার ছোট ভাই।
Published : 14 Apr 2025, 04:39 PM
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জসিম উদ্দিন বেপারীর মৃত্যু হয় বলে তার ছোট ভাই কাউছার হোসেন জানিয়েছেন।
এছাড়া লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) জামিলুল হকও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত জসিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড চরবংশী গ্রামের হজল করিমের ছেলে এবং পেশায় ঢালাই শ্রমিক ছিলেন।
তিনি উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী এবং রায়পুর উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের অনুসারী ছিলেন বলে ফারুক নিজেই জানিয়েছেন।
নিহতের ছোট ভাই কাউছার বলেন, “গত ৭ এপ্রিল কৃষকদল নেতা উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও মোস্তফা গাজীর লোকজন আমার ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে তাকে ঢাকায় হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
“মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে গিয়ে আমার ভাই পরাজিত হয়েছে। তিনি মারা গেছেন। তার মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম ও রায়পুর উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জেরে শামীম ও ফারুকের নেতাকর্মীদের মধ্যে দুই দফায়
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে ওই ইউনিয়ন বিএনসিহ সব অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম বিলুপ্ত করা হয়।
এরপর ৭ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় শামীম গাজী ও ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার সময় বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি ও জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে শামীমের অনুসারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। একই জের ধরে ৮ এপ্রিল ফের হামলা চালিয়ে শামীমের অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর, হত্যা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন বিএনপি কর্মী স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যান। এতে ৯ এপ্রিল তার বড়ভাই হানিফ দেওয়ান বাদি হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ১৬০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
১৩ এপ্রিল র্যাব-১১ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জলিল দর্জিকে গ্রেপ্তার করে রায়পুর থানায় হস্তান্তর করে। ঘটনার পর ১৬ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে উপজেলা বিএনপি।
লক্ষ্মী সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর সার্কেল) জামিলুল হক বলেন, “আমরা জসিমের বাড়িতে যাবো। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সাইজ উদ্দিন হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার আছে।”