“১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকরে খাওয়ালে না।”
Published : 14 Apr 2025, 11:23 PM
কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা দরপত্রে পাওয়া কাজের টাকায় ঠিকাদারের কাছে জিলাপি খাওয়ার ‘আবদার’ জানিয়েছেন।
সোমবার এ ঘটনার একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়।
ফোনালাপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা পর্যায়ের সংগঠক ও ঠিকাদার আফজাল হুসাইন শান্তর সঙ্গে কথা বলেন ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেন।
সেখানে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলাম তো সারা জীবন; তোমরা যে ১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকেরে খাওয়ালে না।
“খাইয়া একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের; তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের উপরে টাকা আইনা আগে জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইল সবার আগে; পরে তো বিল পামু, তাই না?”
এক পর্যায়ে ওসি বলেন, “ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, জিলাপি হইলেই হইব; এক প্যাঁচ, আধা প্যাঁচ জিলাপি দিলে হইব। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইল আর কী, বোঝ না?”
এসময় আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন, “বিল-টিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবনে।”
তখন ওসি বলেন, “ঠিক আছে।”
ঠিকাদার শান্ত পরে ফোনালাপের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আমি ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪৮০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পাই।
“কাজ শেষ হওয়ার পরে থানায় গেলে তিনি (ওসি) জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করে রাখতে পারিনি। পরে ওসির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হলে আমার কাছে ফসল রক্ষা বাঁধ করে যে লাভ হয়েছে, সেখান থেকে জিলাপি খেতে চান।”
তিনি বলেন, “আমি সরকারি কাজ পেয়েছি টেন্ডারের মাধ্যমে। এখানে ওসি কি জিলাপি খেতে চাইতে পারেন? আমার কাছে যদি জিলাপি খাইতে চাইতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা শান্তিতে আছে বুঝতে পারছেন?”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, “আমরা ঘটনা তদন্তের দাবি জানাই।”
এ ব্যাপারে ওসি মনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি ‘মজার ছলে’ ওই ব্যক্তির কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছিলেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”