পানিবন্দি থাকায় দুর্ভোগ বাড়ছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের। একইসঙ্গে গবাদিপশুর খাদ্য জোগানেও তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।
Published : 20 Jun 2024, 08:17 PM
লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলার নদীর পানি কিছুটা কমায় তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে একইসঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা লিমন বলেন, ধরলার ভাঙনে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বুদারু মৌজার তিনটি বাড়ি নদীতে চলে গেছে।
আরো কিছু বাড়ি-ঘর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, যে কোনো সময় সেগুলো নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কার কথা জানান তিনি।
উপজেলার কালমাটির এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দা হাসান আলী (৫০) বলেন, “বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ পানির চাপ বৃদ্ধি পায়। পানির গর্জনে রাতের ঘুম হারাম গেছে। এর মধ্যে রাতে প্রতিবেশীর বাড়ির একটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।”
এদিকে তিস্তা ব্যারাজ (ডালিয়া) পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১.৯১ মিটার। যা বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নিচে।
এর আগে সকাল ৬টায় ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল ৫২.০৫ মিটার। যা আগের দিন বুধবার একই সময়ে ছিল ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার।
এছাড়া পানিবন্দি থাকায় দুর্ভোগ বাড়ছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের। একইসঙ্গে গবাদিপশুর খাদ্য জোগানেও তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটির বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, গত তিন দিন ধরে বাড়িতে পানি থাকায় চুলা জ্বালাতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।
সাইদুলের স্ত্রী বলেন, “দিনে একবার রান্না করাই কষ্টকর। এছাড়া গরুর খাদ্য পেতেও কষ্ট করতে হচ্ছে।”
আদিতমারী উপজেলার বারঘরিয়া, গোবরধনসহ তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি থাকা পরিবারের লোকজন বলেন, তিস্তার ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতে বন্যা ও বারবার ভাঙনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের ।
এ সমস্যা সমাধানে আশু তিস্তা নদী খনন বা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, “টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সব কটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি দ্রুতই নেমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। “
নদীতে পলি পড়ে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, নদী ভাঙন ঠেকাতে জরুরি আপৎকালীন কাজ হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
পুরানো খবর
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত