“২০২৪ সালের নির্বাচনের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিলেন উপাচার্য শুচিতা শারমিন।”
Published : 17 Feb 2025, 11:27 PM
শিক্ষকদের ‘ফ্যাসিস্ট’ বলায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। নাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, “উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শারমিন ১৬ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে ফ্যাসিস্ট বলে গালি দিয়েছেন। আমরা প্রমাণ সহকারে জানি শুচিতা শারমিন নিজে ছিলেন ফ্যাসিস্ট শক্তির একজন চিহ্নিত দোসর।
“২০২৪ সালের নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়ে বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক ও পেশাজীবীরা যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তাদের সেই বিবৃতিতে ১০৮ নম্বর স্বাক্ষরকারী ছিলেন শুচিতা শারমিন। এমন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে ফ্যাসিস্ট বলছেন- এর চেয়ে লজ্জার ও ঘৃণার কিছু হতে পারে না।”
অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার বলেন, “আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই এবং আমরা দাবি জানাচ্ছি, এই বক্তব্যের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।”
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আইন উপেক্ষা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সদস্যের অংশগ্রহণ ছাড়াই সিন্ডিকেট সভায় অবৈধ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানান শিক্ষকরা।
তারা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন। অনুরোধ উপেক্ষা করা হলে কঠিনতর আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৫ শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসীন উদ্দিন বলেন, “উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা আমাদের সাধারণ কর্মকাণ্ডকে বিঘ্নিত করছে। তিনি আইন অমান্য করে সিন্ডিকেট সভাকে বিশেষ সভায় রূপান্তর করেছেন, সিন্ডিকেট সদস্যদের মতামত ছাড়াই। এ ছাড়া সহউপাচার্যের নিয়োগের সাড়ে তিন মাস পার হয়ে গেলেও তাকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে সহউপাচার্যের মতামতকে উপেক্ষা করে চলেছেন। এরকম অনেক স্বেচ্ছাচারিতার উদাহরণ রয়েছে।”
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “আমরা চাই আইনের শাসন। উপাচার্য, সহউপাচার্য ও ট্রেজারার সংবিধি অনুযায়ী চলবেন। তারা কেউ আইনের অপব্যাখ্যা করে স্বেচ্ছাচারিতার পথে চলবেন সেটা আমরা শিক্ষক সমাজ মানব না।”
এদিকে, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে বরিশাল নগরীর সদর রোডে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধন করেছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাবেক ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, “শুচিতা শরমিন স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন। তার অপসারণের দাবিতে আমরা মানববন্ধন করেছি।”