বিজিবি জানায়, বিকেলে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকে জহিরুলের লাশ ফেরত চাওয়া হয়েছে।
Published : 04 Dec 2023, 11:10 PM
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
সোমবার ভোর রাতে উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের কাঁঠালডাঙ্গী সীমান্ত এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে হরিপুর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ ও ঠাকুরগাঁওয়ের ৫০ বিজিবির কাঁঠালডাঙ্গী বিওপির কোম্পানি কমান্ডার এন্তাজুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মখলেছুর রহমান (২৭) এবং একই এলাকার আব্দুল বাসেদের ছেলে জহুরুল ইসলাম (২৬)।
হরিপুর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, দুপুরে নাগর নদীর উপশাখা শিরানী নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং তার শরীর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল।
“পরে স্থানীয়রা মখলেছুর রহমানকে শনাক্ত করেন। তার লাশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ধারণা করছি, সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় হয়ত বিএসএফের গুলিতে মখলেছুর রহমান নিহত হয়েছেন।”
বিজিবি কাঁঠালডাঙ্গী বিওপির কোম্পানি কমান্ডার এন্তাজুল হক বলেন, “সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক জহুরুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।
“সেই সঙ্গে ভারতে থাকা জহুরুল ইসলামের লাশ ফেরত চাওয়া হয়। বিএসএফ তাদের আইনি কাজ শেষে লাশ ফেরত দেবে বলে জানিয়েছে।
বিএসএফের গুলিতে একই ঘটনায় মখলেছুর রহমান নিহত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কমান্ডার বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি, জহুরুল ইসলাম বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন; এর বাইরে কিছু বলতে পারছি না।”
এদিকে হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম বলেন, “কাঁঠালডাঙ্গী সীমান্তের ওপারে অর্থাৎ ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে মখলেছুর রহমান ও জহুরুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন।
“এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মখলেছুর রহমান বাংলাদেশে ফেরত আসেন এবং নাগর নদীর উপশাখা শিরানী নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ পরে থাকতে দেখা যায়।
“অপরদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিএসএফ সদস্যরা জহুরুল ইসলামকে ভারতের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানতে পেরেছি। মঙ্গলবার তার মরদেহ ফেরত পাওয়া যেতে পারে।
চেয়ারম্যান তরিকুল বলেন, “মখলেছুর রহমান ও জহুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কাজে যুক্ত ছিলেন। ভোর রাতেও হয়তো তারা ভারতে অবৈধ কাজের জন্য গিয়েছিলেন। তখন বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে তাদের মৃত্যু হয়।”