সংঘর্ষে আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
Published : 22 Jun 2024, 02:42 PM
রাজশাহীর বাঘায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
শনিবার সকালে এ সংঘর্ষের সময় কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম।
সকাল ১১টার দিকে বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হলেও এক পর্যায়ে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষে আহতদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু, আড়ানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান শফি।
এদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আক্কাছ আলীর অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে মানববন্ধনের ডাক দেয় তার বিরোধী পক্ষ। আওয়ামী লীগের এই অংশটি স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সদ্য উপজেলা নির্বাচনে ১০৬ ভোটে পরাজিত রোকনুজ্জামান রিন্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলু। উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
অপরদিকে, সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে বাঘা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিক লেখক সমিতির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা চেয়ারম্যান লায়েভ উদ্দিন লাভলুর সমর্থিত স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরেকটি পক্ষ।
মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে পৌরসভার সামনে থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অপর পক্ষের মানববন্ধন অতিক্রমের সময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
তবে এ সংঘর্ষ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে উভয়পক্ষ।
উপজেলা চেয়ারম্যান লাভলুর পক্ষের সমর্থকদের দাবি, মানববন্ধন থেকে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। আর সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের সমর্থকরা দাবি করেছেন, মিছিল নিয়ে এসে তাদের মানববন্ধনে হামলা করা হয়েছে।
রোকনুজ্জামান রিন্টু বলেন, পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে এসে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়েছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবলুসহ তাদের পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে বাবলুসহ দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে মানববন্ধন থেকে হামলা করা হয়েছে। এতে তিনিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, দুটি কর্মসূচিতে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি জানিয়ে ওসি বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।