জায়েদা খাতুন নিজের ছবির সঙ্গে সাবেক মেয়র ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের নাম ও ছবি সম্বলিত পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার করেছেন।
Published : 12 May 2023, 12:54 AM
আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী জায়েদা খাতুনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর নিজের ছবির সঙ্গে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের নাম ও ছবি সম্বলিত পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার শুরু করেছেন।
এটি সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৮ (৫) লঙ্ঘন।
সিটি কর্পোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৮(৫) এ বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজ ছবি ও প্রতীক ব্যতীত অন্য কারো নাম, ছবি বা প্রতীক ছাপাইতে কিংবা ব্যবহার করিতে পারবেন না।
তবে শর্ত থাকে যে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সেক্ষেত্রে তিনি দলের বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবিসহ পোস্টার বা লিফলেট ছাপাতে পারবেন।
আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে শাস্তির কথা বলা আছে বিধিমালার ৩১ বিধিতে।
৩১ বিধিতে বলা হয়, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন পূর্ব সময়ে আচরণ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে তা একটি অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া ৩২ বিধিতে প্রার্থিতা বাতিলের কথা উল্লেখ রয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিসে বলা হয়, নির্বাচন আচরণ বিধিমালা অনুসারে কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কাছে কারণ দর্শানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর সম্বলিত নোটিসটি বৃহস্পতিবার রাতে প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় মুন্সিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম খলিল গ্রহণ করেছেন।
আগামী ২৫ মে এ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গতবারের নির্বাচনে জেতা জাহাঙ্গীর আলম এবার স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে চেয়েও পারছেন না। তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ঋণ খেলাপির কারণে। তবে তিনি মা জায়েদা খাতুনের জন্য নেমেছেন ভোটের মাঠে।
২০১৮ সালের নির্বাচনে জাহাঙ্গীরকে দলীয় প্রতীক নৌকা দেয় আওয়ামী লীগ। ওই বছর তিনি বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারকে ২ লাখ দুই হাজার ৩৯৯ ভোটে হারিয়ে মেয়র হন।
এরপর এখানে জাহাঙ্গীরের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছিল। এর মধ্যে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের একটি অংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে মেয়রের দলীয় সদস্যপদ কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপর বরখাস্ত হন মেয়র পদ থেকেও।
ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে গত ১ জানুয়ারি তাকে ক্ষমা করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ।
‘টেবিল ঘড়ি’ নিয়ে সামনে মা জায়েদা, পেছনে জাহাঙ্গীর