২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর শামীম কারখানায় একটি মগে রাখা অ্যাসিড কেয়ার গায়ে ঢেলে দেন এবং লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে পালিয়ে যান।
Published : 30 May 2024, 10:56 PM
যশোরের অভয়নগরে একটি লেদার কারখানার নারী শ্রমিককে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার দায়ে তার এক সহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এই রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) এম ইদ্রিস আলী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শামীম হোসেন অভয়নগর উপজেলার জাফরপুর গ্রামের খন্দকার মোশারফ হোসেনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত কেয়া খাতুন অভয়নগর উপজেলার তালতলা এলাকার আকিজ গ্রুপের এসএএফ লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিক ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় তিনি কাদিপাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন।
মামলার সূত্রে পিপি ইদ্রিস আলী বলেন, কেয়ার দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় শামীমও একই কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এক পর্যায়ে কেয়াকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেন শামীম। কিন্তু কেয়া তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তাকে ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র করতে থাকেন শামীম।
“২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে মিলের ক্রাস্ট ইউনিটের ভিতরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন কেয়া। এ সময় শামীম সেখানে গিয়ে তাকে কু-প্রস্তাবসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করছিলেন।
“কিন্তু কেয়া তাতে রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম একটি মগে রাখা অ্যাসিড কেয়ার গায়ে ঢেলে দেন। তখন কেয়া চিৎকার শুরু করলে শামীম লোহার পাইপ দিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যান।
“মিলের অন্য শ্রমিকরা কেয়াকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
আদালতের পিপি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের মামা লুৎফর রহমান মজুমদার অ্যাসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শামীমকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে আসামি শামীমকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার।
ওই মামলায় বিচারকাজ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার আসামি শামীম হোসেনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানান পিপি ইদ্রিস আলী।