৫০ কেজির প্রতিবস্তা চাল কেনা হয়েছে দুই হাজার ৩০০ টাকায়।
Published : 17 Dec 2024, 10:24 PM
মিয়ানমারে মংডু শহর থেকে প্রায় দুই বছর পরে প্রথম চালানে ১৯ টন বস্তা আতব চাল ভর্তি একটি ট্রলার কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে এসে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার বিকালের দিকে ট্রলারটি টেকনাফ স্থলবন্দরে আসে। এর আগে সবশেষ ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টম্বর টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড ল্যান্ড পোট টেকনাফ লিমিটেডের’ ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
আনোয়ার বলেন, “২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ২৩৭ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। এরপর মিয়ানমার থেকে আর কোনো ধরনের চাল আমদানি হয়নি। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পরে ‘মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্স’ একটি ট্রলারে করে চাল আমদানি করে।”
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী শওকত আলী চৌধুরী বলেন, মোহাম্মদ সেলিম নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর হয়ে তারা চালানটি এনেছেন। চালগুলো খালাসের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে।
স্থলবন্দর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাতের প্রভাবে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। সীমান্ত বাণিজ্যের আওতায় মংডু শহর, আকিয়াব ও ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে হিমায়িত মাছ, বিভিন্ন প্রকারের কাঠ, শুটকি, সুপারি, নারকেল, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হতো।
মংডু শহর থেকে পণ্য আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি। সম্প্রতি ইয়াঙ্গুন বন্দর দিয়ে প্রতি মাসে ৬-৮টি করে পণ্যবাহী ট্রলার আসছিল। যদিও সংঘাতের আগে প্রতি সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে আমদানি পণ্য নিয়ে টেকনাফে ভিড়ত ৮-১৫টি নৌযান।
মংডু শহর আরাকান আমি দখলে নেওয়ার পর নাফনদীতে নিষেধাঞ্জা জারি করায় গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনটি ট্রলার মিয়ানমারের ফিরে যেতে না পেরে টেকনাফ স্থলবন্দর ও নাফনদীতে নোঙ্গর করে রয়েছে।
মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “মিয়ানমার থেকে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) চাল কেনা হয়েছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। পরিবহন, শ্রমিক ও বন্দর খরচসহ আরও ১০০ টাকা খরচ গুনতে হচ্ছে।
“চালগুলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাঠানো কথা রয়েছে। সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া গেলে আরও চাল আনা হবে।”
স্থল বন্দরের শ্রমিক মাঝি মোহাম্মদ সামছু বলেন, “মিয়ানমারের যুদ্ধের পর থেকে আমদানি-রপ্তানি থমকে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। সরকার চাইলে সীমান্ত বাণিজ্য ত্বরান্বিত করতে পারে।”
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা বি এম আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, মংডু শহর থেকে ১৯ মেট্রিকটন চাল নিয়ে একটি ট্রলার স্থল বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করেছে। আইজিএম জমা দিলে পণ্য খালাস পাশাপাশি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।