২৬ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান।
Published : 15 Dec 2024, 08:17 PM
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের নিয়োগ বাতিল চেয়ে এবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষকরা।
রোববার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকরা এই দাবি জানান।
২৬ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান। এর আগে তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছিলেন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তিনি।
তার নিয়োগের প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেজারার। শিক্ষার্থীরা উপাচার্য কক্ষে ঢুকে ট্রেজারারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আনেন এবং তাকে যোগদানে বাধা দেন। যদিও সেদিন শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেছিলেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
শিক্ষার্থীদের পর কোষাধ্যক্ষের নিয়োগের প্রতিবাদে সামিল হন শিক্ষকরাও। ২ ডিসেম্বর তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির পর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, “২৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে আবু হেনা মোস্তফা কামালকে ট্রেজারার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছিলেন। ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান চরমভাবে বির্তকিত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে প্রমাণিত।
“দেশের অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ ও যোগ্য লোক রয়েছে। তাদের উপেক্ষা করে আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাতের অন্ধকারে যোগদান করতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ব্যর্থ হন তিনি (কোষাধ্যক্ষ)।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে শিক্ষকদের অবস্থান
তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর নিয়োগের প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত আবু হেনা মোস্তফা কামালের নিয়োগ বাতিল চেয়েছেন তারা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে দেওয়া গাড়ি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম ও মাহফুজ আলম, মার্কেটিং বিভাগের আব্দুল কাইউম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাদেকুর রহমান, সিরাজিস সাদিক, সৈয়দ আশিক-ই-ইলাহী, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের জামাল উদ্দীন, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের আব্দুল আলিম বাসের, সমাজকর্ম বিভাগের আবু জিহাদ ও প্রভাষক মোস্তাকিম রহমান।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. জামাল উদ্দীন বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ বাতিল করা না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষকদের কর্মসূচি পালন নিয়ে এর আগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। এর আগে কোনো মন্তব্য করবেন না তিনি।