এপিবিএন সদস্যদেরও লক্ষ্য করে গুলি করে সন্ত্রাসীরা।
Published : 10 Jun 2024, 05:12 PM
কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার আশ্রয় শিবিরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিন রোহিঙ্গাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও সাতজন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন ও থানা পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরসার’ সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
সোমবার ভোরে উপজেলার মধুরছড়া ৪ নম্বর এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে বলে ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল জানান।
নিহতরা হলেন-ওই ক্যাম্পের জাফর আহমেদের ছেলে মো. ইলিয়াছ (৩১), একই ক্যাম্পের আবদুর রকিমের ছেলে মো. ইছহাক (৫৪) ও ৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. ইসমাইলের ছেলে ফিরোজ খাঁন (১৮)।
আহতদের মধ্যে তিনজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-৪ নম্বর ক্যাম্পের মো. হাছানের ছেলে আব্দুল হক (৩২), নজির আহমদের ছেলে আব্দুস শুক্কুর (৫৫) ও মৃত ওমর মিয়ার ছেলে আব্দুল মোনাফ (৬০)।
আহতরা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এনজিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এপিবিএন অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, “ভোরে ৪০-৪৫ জন ‘আরসা সন্ত্রাসী’ পাহাড় থেকে সীমানার কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ৪ নম্বর ক্যাম্পে আসে। সেখানে ক্যাম্পের পাহারায় থাকা রোহিঙ্গা ইলিয়াছকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাতে-পায়ে ও তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এতে ইলিয়াস ঘটনাস্থলেই মারা যান।
“খবর শুনে সাধারণ রোহিঙ্গারা এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আহত হন আরও ছয়জন। পরে তাদের উদ্ধার করে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হয়।”
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজন মারা যান বলে জানান এপিবিএনের এ কর্মকর্তা।
পুলিশের এ অধিনায়ক বলেন, “খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গেলে এপিবিএন সদস্যদেরও লক্ষ্য করে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। সরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার জন্য পুলিশও পাল্টা ১৬ রাউন্ড গুলি ফায়ার করে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।”
আরসার সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার এবং নাশকতার চেষ্টা করছে জানিয়ে ইকবাল বলেন, “মূলত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় তারা। এ সময় আরসারা সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং কুপিয়ে তিনজন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সাতজন।”
উখিয়া থানার পরিদর্শক মো. শামীম হোসেন বলেন, নিহত তিন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।