কায়সারের ইশতেহারে ‘সবার জন্য মানবিক কুমিল্লা’ গড়ার প্রতিশ্রুতি

এ সময় কুমিল্লা মহানগর, জেলা বিএনপি এবং দলের অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

আবদুর রহমানকুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2024, 03:40 PM
Updated : 3 March 2024, 03:40 PM

‘ধনী-গরিব সবার জন্য একটি মানবিক কুমিল্লা’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজের নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করেছেন সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার।

রোববার বিকালে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ের নিজ কার্যালয়ে এই ইশতেহার ঘোষণার সময় কুমিল্লা মহানগরী, জেলা বিএনপি এবং দলের অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

চার প্রার্থীর মধ্যে সবার আগে ইশতেহার দিয়ে ঘোড়া প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, অন্য প্রার্থীদের মত প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয়, নির্বাচিত হলে সব প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করে দেখাবেন। এজন্য কুমিল্লা নগরবাসীর কাছে একটিবার সুযোগ চেয়েছেন। কখনোই দুর্নীতিতে জড়াবেন না; বরং সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএমে) মাধ্যমে কুমিল্লা সিটিতে মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। এ উপনির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দুইজন নেতা এবং বিএনপির সাবেক দুইজন নেতা তথা চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়ছেন।

অন্য তিনজন হলেন- কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসিন বাহার সূচনা, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, দুইবারের সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক নেতা মনিরুল হক সাক্কু। 

কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার তার ইশতেহারে বলেন, শিক্ষা-সংস্কৃতির পাদপীঠ হিসেবে পরিচিত আমাদের এই কুমিল্লা। এক সময় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ছিল কুমিল্লা। তবে বর্তমানে কুমিল্লা তার ‘কুমিল্লা’ নাম ধারণ করেও বিভাগ হতে পারছে না। এ থেকেই বোঝা যায় কুমিল্লা কতোটা বঞ্চিত! ছোট্ট-ছিমছাম নগরীটা অতীতের জনপ্রতিনিধিদের অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে অনুন্নয়নের থাবায় অনেকখানি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। উন্নয়নের নামে দুর্নীতি আর লুটপাট ও অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নের বৈষম্য আজ দৃশ্যমান।

“তাই আধুনিক কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গড়তে আমার প্রথম বিবেচনার বিষয় হল ‘গরিব-ধনী সবার জন্য মানবিক এক নতুন কুমিল্লা’ গড়ে তোলা। যেখানে নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে সবকিছুর উপরে, মানুষের অধিকার থাকবে সুরক্ষিত।”

নগরীর প্রধান সমস্যা যানজট ও জলাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে নগরীর প্রতিটি সড়ক যানজটের সড়কে পরিণত হয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে যানজট নিরসনে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করবো। কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশ-নির্গমনের জন্য পদুয়ার বাজারে ফ্লাইওভার, টমছমব্রিজে আন্ডারপাস নির্মাণ এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ইন্টারসেকশনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। পর্যাপ্ত ও পরিচ্ছন্ন ফুটপাতের ব্যবস্থাগ্রহণ এবং কার্যকর কল্পে বিভিন্ন আইনসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

“নগরীর জলাবদ্ধতার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে উঠার কারণে কুমিল্লা মহানগর এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যায়। এজন্য পানি নিষ্কাশন ও বৃষ্টির পানিসমূহ প্রবাহের জন্য সব ড্রেন ও খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদপূর্বক বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পরিকল্পনা (স্বল্প ও দীর্ঘকালীন) গ্রহণ করে নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

কায়সার বলেন, মাদকের কারণে কুমিল্লা বিপর্যস্ত। এমনকি মাদকের কারণে জনপ্রতিনিধি খুনের ঘটনাও ঘটেছে। মাদক দূরীকরণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসা এবং তাদেরকে সাইকোলজিস্ট, মনোবৈকাল্য বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা হবে।

আরও পড়ুন:

Also Read: এটা আমার শেষ নির্বাচন: সাক্কু