ঘটনার চার দিন পর ঢাকার দিয়াবাড়ি এলাকার কাশবন থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
Published : 26 Sep 2024, 10:08 PM
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছেলেকে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে বাবা গলাটিপে হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার চার দিন পর বুধবার শিশুটির বাবাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য দিয়েছে বলে জানান গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন।
গ্রেপ্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকার কাশবন থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত আব্দুর রহমান মুছা (১১) টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় পান্নু খানের ভাড়া বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকত। মুছা ওই এলাকার হলি ক্রিসেন্ট হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গ্রেপ্তার শিশুটির বাবা মহিউদ্দিন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ডুয়াটি গ্রামের সিরাজ মাতবরের ছেলে।
এর আগে শনিবার নিখোঁজ মুছার সন্ধান চেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা শরিফুন নেছা।
টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই মো. আরিফ হোসেন জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে মহিউদ্দিন ও শরিফুন নেছার বিয়ে হয়। পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় একমাত্র সন্তান মুছা।
বিয়ের কয়েক বছর পর মহিউদ্দিন প্রবাসে পাড়ি জমান। প্রায় নয় বছর পর মহিউদ্দিন দেশে ফিরে স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন করে ফরিদপুরের ভাঙা উপজেলার বাউনকান্দা গ্রামের সুমনা আক্তারকে বিয়ে করেন।
বিয়ের কয়েক মাস পর সুমনা মহিউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের তথ্য জেনে যান। এরপর থেকে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়।
এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে শরিফুন নেছা ও ছেলে মুছাকে নিয়ে টঙ্গীর গোপালপুর এলাকায় বসবাস শুরু করেন মহিউদ্দিন।
গ্রেপ্তারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে এসআই আরিফ বলেন, “২১ সেপ্টেম্বর বিকালে মুছাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন মহিউদ্দিন। পরে শিশুটিকে রাজধানীর তুরাগ এলাকার একটি কাশবনে নিয়ে যায় তিনি।
“সেখানে তাকে গলাটিপে হত্যা করে কাশবনের ভেতরে ফেলে রেখে বাসায় চলে আসেন মহিউদ্দিন। বাসায় ফিরে মুছা হারিয়ে গেলে বলে জানান। পরে মহিউদ্দিন বাসা ছেড়ে চলে যান।”
“শিশুটির মায়ের করা জিডির সূত্র ধরে মঙ্গলবার রাতে মহিউদ্দিনকে ফরিদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার মুছার লাশ উদ্ধার করা হয়।”
মুছার মা শরিফুন নেছা সাংবাদিকদের বলেন, “বিয়ের পর থেকেই মহিউদ্দিনের সঙ্গে আমরা কলহ চলছিল। পরে তিনি সৌদি আরব যান। ফিরে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মহিউদ্দিন। মুছাকে নিয়ে আমি টঙ্গীতে বাস করছিলাম। সেখানে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি।
“শনিবার মুছাকে নিয়ে ঘুরতে যান তার বাবা। ফিরে এসে মুছা হারিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। কিন্তু ছেলের সন্ধান না করে রাতেই ফরিদপুরে চলে যান মহিউদ্দিন।”
বৃহস্পতিবার উপ-কমিশনার আলমগীর হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার মহিউদ্দিনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।