তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় দিন দিন সাথী ফসল চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
Published : 01 Jan 2025, 01:19 AM
বগুড়ায় চলতি মৌসুমে যমুনা নদীর তীরে সাথী ফসলের ব্যাপক চাষ হয়েছে। আর এ ফসল থেকে লাভবান হতে পেরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
সাথী ফসল চাষে তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় এতে দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সারিয়াকান্দী উপজেলার বোহাইল চর, আওলাকান্দী চর, ধারাবর্ষা চর, কাজলা চর, যমুনার তীরের পশ্চিম পাড়ে ধনুট উপজেলার শহড়াবাড়ী, শিমুলবাড়ী, বানিয়ান, কৈয়াগাড়ী, ভুতবাড়ী, রঘুনাথপুরে এবার মাঠে মাঠে সাথী ফসল চাষ হয়েছে।
একই জমিতে বেগুন, মরিচ, শলুক, তিল আবার কোথাও সয়াবিন, আখ, ধনে পাতা, কালোজিরার চাষ করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার ক্ষেতের আইলে পেঁপে, লাউ, সরিষাও চাষ করেছেন। প্রতিদিনই জমি থেকে কোনো না কোনো ফসল তুলে বিক্রি করছেন চাষী।
শিমুলবাড়ী গ্রামের ময়নুল হাসান বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে সাথী ফসল করেছেন তিনি। আশ্বিন মাসে বেগুনের জমিতে মুলা, শলুক, ধনে পাতা, পালং শাক চাষ করেন। এ পর্যন্ত এখান থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন।
তিনি বলেন, “প্রথমে বেগুনের চারা নয় হাজার টাকায় বিক্রি করি। শলুক ১৩ হাজার, ধনে পাতা পাঁচ হাজার, মুলা শাক ছয় হাজার, পালং শাক সাত হাজার, তিলকুরী শাক চার হাজার টাকা বিক্রি করি। এখন তিন দিন পর পর বেগুন তুলছি।”
আরও দেড় মাস বেগুন বিক্রি করবেন বলে জানান কৃষক ময়নুল হাসান।
বানিয়াজান গ্রামের খলিল আকন্দ বলেন, দেড় বিঘা জমিতে আখ চাষের সঙ্গে বেগুন, শলুক, ধনিয়া, লাল শাকের চাষ করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত বেগুন এক লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। আরও বিক্রি হবে বলে আশা তার।
এ ছাড়া শলুক, ধনে পাতা, লাল শাক ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। আখ আরও দুই মাস পর হবে। গত বছর ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছিল। এবারও সেই টাকা বিক্রি হবে বলে আশা খলিল আকন্দের।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মতলুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জনসংখ্যা বাড়ছে। আবাদি জমিতে ঘরবাড়ি হচ্ছে। জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে। তাই কৃষকে সাথী ফসল এবং রিলে ফসল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাথী ফসলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। কলার বাগানে আদা, বেগুনের জমিতে পালং শাক, ধনে পাতা, শলুক চাষ করা যায়। আবার ধান কাটার আগে জমিতে সরিষা বপন করা যায়। এতে তুলনামূলক খবরও হয় কম।
যদিও কত হেক্টর জমিতে সাথী ও রিলে ফসল চাষ হয়েছে তার কোনো হিসাব কৃষি বিভাগের কাছে নেই। তবে আগামী মৌসুম থেকে এই পরিসংখ্যান করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।