কিশোরগঞ্জে ডাচ্-বাংলার ‘এজেন্ট উধাও ২০ কোটি টাকা নিয়ে’

সংশ্লিষ্ট কারও সন্ধান না পেয়ে গচ্ছিত টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কয়েকশ গ্রাহক।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2023, 04:38 PM
Updated : 15 March 2023, 04:38 PM

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় গ্রাহকদের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তার উধাও হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গ্রাহকদের দাবি, গত রোববার থেকে উপজেলার বোর্ড বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শাখাটি তালাবদ্ধ আছে। সেদিন থেকে ওই আউটলেটের এজেন্ট মো. আলমগীর ও ব্যবস্থাপক রিটন মিয়াসহ কয়েকজন উধাও হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কারও সন্ধান না পেয়ে গচ্ছিত টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কয়েকশ গ্রাহক। প্রতিবাদে গ্রাহকরা এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যালয়ের সামনে প্রতিদিন বিক্ষোভ করছেন।

হোসেনপুর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে কয়েকজন গ্রাহক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পুলিশ চেষ্টা করেও আলমগীর ও তার সহযোগীদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযান অব্যাহত আছে।

হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ মণ্ডল জানান, বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “অভিযোগ জানার পর ইউএনও ও ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টাকা গচ্ছিত রাখা কয়েকজন জানান, এই এলাকার অনেকের স্বজনই প্রবাসী। তাদের পাঠানো টাকা এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় জমা করেছিলেন ডিপিএস হিসেবে। সেই টাকার ওপর প্রতি লাখে এক হাজার টাকা সুদও পাচ্ছিলেন। কিন্তু রোববার থেকে শাখাটি তালাবদ্ধ করে এজেন্ট উধাও হয়ে গেছেন।

গ্রাহক ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে একই উপজেলার হুগলাকান্দি গ্রামের আলমগীর তার অংশীদার বীর কাটিহারি গ্রামের মানিক মিয়াকে নিয়ে বোর্ড বাজারে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করেন।

ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় হুগলাকান্দি গ্রামের রিটন মিয়াকে।

এক পর্যায়ে স্থায়ী আমানত বা ডিপিএস এক লাখ টাকা জমার বিপরীতে মাসে এক হাজার টাকা করে সুদ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ ঘোষণায় এলাকার অনেকে আগ্রহী হয়ে টাকা জমা দেন।

গ্রাহকদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের ওই শাখায় চর হাজীপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী রতন মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আক্তার স্বামীর পাঠানো ২৭ লাখ টাকা, হুগলাকান্দি গ্রামের আবদুল মোতালিব সাড়ে ১৫ লাখ টাকা এবং একই গ্রামের আবুল কাসেম ১৪ লাখ টাকা আমানত রেখেছিলেন।

তারা গত তিনদিন ধরে ওই আউটলেটে গিয়ে কাউকে পাচ্ছেন না।

তাদের দাবি, হোসেনপুরসহ আশপাশের ৪০০ গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন এজেন্ট আলমগীর ও তার সহযোগীরা।

তাদের কাছে নিজেদের টাকা রাখার প্রমাণ হিসেবে এজেন্ট আলমগীরের স্বাক্ষর করা চেক রয়েছে।

ডাচ্‌-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন জানান, তিনদিন ধরে বোর্ড বাজারের এজেন্টের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বন্ধ আছে। আলমগীর, তার অংশীদার ও এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থাপক উধাও হয়ে যাওয়ায় গ্রাহকেরা চেক হাতে ঘুরলেও টাকা তুলতে পারছেন না। গ্রাহকদের অভিযোগ পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।