“বরিশাল মেডিকেলের চিকিৎসকরা পিঠের ছিদ্র ও পায়ের গঠন দেখে ধারণা করছেন, শিশুটি প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
Published : 23 Mar 2025, 09:29 PM
বরিশাল নগরীতে রাস্তার পাশ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, শনিবার মধ্যরাতের দিকে নগরীর ত্রিশ গোডাউনের সিঙ্গারা পয়েন্ট থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
তিন থেকে চারদিন বয়সী শিশুটি এখন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তার পিঠে একটি ছিদ্র রয়েছে। অসুস্থ থাকায় সরকারি ছোট মনি নিবাসে দেওয়া যায়নি বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, রাতে কে বা কারা শিশুটিকে তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে একটি ঝুড়িতে ফেলে রেখে যায়। শিশুটির পাশে একটি দুধের ফিডার পাওয়া গেছে। এক নারী কান্নার শব্দ শোনে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
নবজাতককে কুড়িয়ে পাওয়া পারভীন বেগম বলেন, তিনি ৩০ গোডাউন নদীর পাড়ে ব্যাটেলিয়ন ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রি করেন। রাতে বাসায় ফেরার সময় শিশুটির কান্নার শব্দ পান।
“পরে স্বামী ও প্রতিবেশীদের নিয়ে বাসার পেছনে গিয়ে দেখি শিশুটিকে ফেলে রেখে গেছে কেউ। সারা শরীরে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মশার কামড় নেই। আধ মরা অবস্থায় রাতেই তাকে মেডিকেলে ভর্তি করি।”
শিশুটির পিঠে একটি টিউমার আছে। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সহায়তা পেলে শিশুটির দায়িত্ব নিতে চান বলে জানান পারভীন বেগম।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, “শিশুটির মেরুদণ্ডে একটি টিউমার রয়েছে। বেশ বড় আকারের টিউমারটি অপসারণে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। টিউমারের কারণে শিশুটির একটি পা অসার হতে পারে। দ্রুত শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
বরিশাল সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে একটি প্রতিনিধিদল শিশুটিকে দেখতে গিয়েছে। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
ওসি মিজানুর রোববার বিকালে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও দেখে কারা ফেলে গেছে তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
“চিকিৎসকরা পিঠের ছিদ্র ও পায়ের গঠন দেখে ধারণা করছেন, শিশুটি প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই হয়তো নবজাতককে রাস্তায় ফেলে গেছেন স্বজনরা।”