জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত।
Published : 03 Nov 2024, 11:33 PM
মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও শনিবার রাতভর কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে এপারের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত। বিস্ফোরণের শব্দের সঙ্গে কেঁপে উঠে টেকনাফের হ্নীলা, পৌরসভা, সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের বসতবাড়িও।
টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, “নাফ নদীর ওপারে টেকনাফ সীমান্ত এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ভেসে এসেছে মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। যার কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের আবার নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।”
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত মংডু শহরের উত্তর ও দক্ষিণে আশেপাশের এলাকায় যুদ্ধবিমান চক্কর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বোমা নিক্ষেপ করেছে। বোমার কম্পনে এখানকার বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। এলাকার মানুষজনকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে।
সাবরাং ইউপির চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, “প্রায় নয় মাস ধরে এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তবে শনিবার রাত থেকে আজ পর্যন্ত বিমানযোগে বোমা নিক্ষেপ করার বিষয়টি খুব ভয়াবহ ছিল। এমন টানা বিস্ফোরণ আর শোনা যায়নি। এমনকি বিস্ফোরণের শব্দও আগের তুলনায় অনেক ব্যাপক এবং ভয়াবহ।”
হ্নীলার দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দা আমানুল্লাহ বলেন, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সেখানাকার সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে চলেছে।
সাবরাং লেজিরপাড়ার আব্দুল হামিদ বলেন, “গতরাতের মত বোমা নিক্ষেপের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। বিমান দিয়ে বোমা নিক্ষেপের কারণে টেকনাফ সীমান্তের বসবাসকারী মানুষকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে। বোমার আঘাতে এপারের মানুষের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে।”
সীমান্তের মানুষজন জানিয়েছেন, টেকনাফ উপজেলার, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফ নদীর মোহনা সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. ইসমাইল জানান, “মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ৫-১০ মিনিট পর পর মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে আমরা ঘুমাতে পারিনি। মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আজকে সারারাত থেমে থেমে বিস্ফোরণ হচ্ছে।”
একই কথা বলেন হ্নীলা ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
এদিকে এই অবস্থার মধ্যে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও কোস্ট গার্ড বাহিনীর সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।