একুশে বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা ‘আদর্শ’কে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার মাধ্যমে মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি মত প্রকাশের স্বাধীনতা দমনে নেমেছে বলে মনে করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
এক বিবৃতিতে ছাত্রসংগঠনটি বলেছে, “মাতৃভাষায় মত প্রকাশের জন্য রক্তদানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে যে প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তোলা হয়েছিল, সেই প্রতিষ্ঠান আজ মত প্রকাশের স্বাধীনতার টুঁটি চেপে ধরছে। শুধু সরকারদলীয় মত থেকে ভিন্ন মত প্রকাশিত হয়েছে- এমন ৩টি বই প্রকাশের জন্য আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বাতিল করা হয়েছে।”
শুক্রবার ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে অবিলম্বে আদর্শকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “এর আগেও বহুবার বাংলা একাডেমি ভিন্ন মত প্রকাশের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার নানা অপচেষ্টা চালিয়েছে। ২০১৬ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, কথিত ‘উস্কানিমূলক’ বই বইমেলায় বিক্রয় হোক- এটা তারা চান না।”
এবারের বইমেলার স্টল বরাদ্দের তালিকা গত ১২ জানুয়ারি প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি, যাতে বেশ কয়েকটি নতুন প্রকাশনা সংস্থা স্থান পেলেও ‘আদর্শ’র নাম নেই।
আদর্শ প্রকাশনীর সিইও মাহাবুব রাহমান বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’, ফাহাম আব্দুস সালামের ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’ ও জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ বই দেখিয়ে আদর্শ কর্ণধার বলেন, এই তিন বইয়ের জন্যই স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি বলে বাংলা একাডেমির লোকজন মৌখিকভাবে জানিয়েছে।
বইমেলায় ‘আদর্শ’র স্টলের অনুমোদন না দেওয়া সরকারের ভিন্নমত দমননীতির বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্ত থেকে অনুধাবন করা যায় যে- সরকারের পক্ষ থেকে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতার যতই বুলি আওড়ানো হোক, স্বাধীন মত প্রকাশের উপর বাংলাদেশে আইনি ও আইনবহির্ভূত চাপ কতটা প্রকট।
“একদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা নিবর্তনমূলক আইন তৈরি করে আইনি প্রক্রিয়ায় জনমানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হচ্ছে, অপরদিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, বই ও প্রকাশনা প্রকাশ ও বিক্রয়ে নানামুখী প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ সকলের মত প্রকাশের অধিকারের কবর রচনা করা হচ্ছে।”