বিএনপির ভাষ্য চিঠিতে জানার অপেক্ষায় ইসি

বিএনপির প্রত্যাখ্যানের খবর পেলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে দলটির আনুষ্ঠানিক জবাব চাইছে ইসি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2023, 01:17 PM
Updated : 29 March 2023, 01:17 PM

আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বিএনপিকে না পাওয়ার পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য দলটিকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার; সেই প্রস্তাবও হয়েছে প্রত্যাখ্যাত। তারপরও বিএনপির আনুষ্ঠানিক ভাষ্যের জন্য অপেক্ষা করছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

নির্বাচন কমিশনার এম আলমগীর বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বিএনপিকে আলোচনায় পাওয়ার আশা এখনও ছাড়ছেন না তারা। বিএনপির আনুষ্ঠানিক জবাব দিলে নতুন কিছু ভাববেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই দফা সংলাপ করেছিল ইসি। তবে বিএনপি ও তাদের মিত্র দলগুলো তাতে যোগ দেয়নি। তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো আলোচনা চাইছে না।

এই অবস্থায় বিএনপির কথা শুনতে গত ২৩ মার্চ অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চিঠি পাঠান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তবে বিএনপি মহাসচিব বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেন, তারা ইসির সঙ্গে আলোচনায় যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছেন না।

বিএনপির প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নির্বাচন কশিমনার আলমগীর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কমিশন বৈঠকে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

“মাননীয় সিইসি বলেছেন, ‘লিখিত দিয়েছি, লিখিত উত্তরের আশা করছি’। আমরা একটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপর আবার বসে সিদ্ধান্ত হবে; পরবর্তী পদক্ষেপ আলোচনা করেই নেব।”

ফখরুল বলেছেন, তারা সংবাদ সম্মেলনেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। চিঠি পাঠানোর প্রয়োজন দেখছেন না তারা।

আলমগীর বলেন, “তৃতীয়বার আমরা একটা চিঠি দিলাম… এজেন্ডা যদি উনারা লেখেন, তখন আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের যতটুকু করার আছে, আমরা তা করব। আমরা তো আশা করি, তারা আসবে। আমাদের আশা অব্যাহত থাকবে।”

Also Read: সংলাপে আনতে বিএনপিকে ফের ইসির চিঠি

Also Read: বিএনপিকে সংলাপে ডাকিনি, অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ডেকেছি: সিইসি

Also Read: ‘বিশিষ্ট ভদ্রলোক’ সিইসিকে বিএনপির ধন্যবাদ, আলোচনার আহ্বানে ‘না’

এই বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। নির্বাচনে সব দলকে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলছেন নির্বাচন কমিশনাররা।

আলমগীর বলেন, “ইসি চায় সবাই নির্বাচন অংশগ্রহণ করুক, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক। এজন্য সংবিধান, আইন যা আছে, তাতে যা করা প্রয়োজন, তার সব করা হবে।

“আমরা আশাবাদী মানুষ। নির্বাচনের অনেক সময় আছে। এর মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে সিদ্ধান্তে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে না।

“এক-দুইটা রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করলেই যে অংশগ্রহণমূলক হয়নি, একথা বলা যাবে না। তবে এটা ঠিক যে যেগুলো বড় রাজনৈতিক দল আছে, সে বড় দলগুলো অংশগ্রহণ যদি না করে, সে নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে না।”

খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন- এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, “উনি নমিমেশন সাবমিট করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। কারণ এখন যে অবস্থা, আর তখনকার অবস্থা তো আলাদা হতে পার। এই মুহূর্তে তো বলা যাবে না।”

বিএনপি না এলে তাদের মিত্র অন্য দলগুলোকে ফের আমন্ত্রণ জানান হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা এ নিয়ে আগামীকাল আলোচনা করবো।

“সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যখন যাকে প্রয়োজন মনে করব, আমরা আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানাতে পারি।”

বর্তমান সীমানায় আপত্তি ১২৬টি

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর জানান, এবার সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে ১৮৬টি আবেদনের মধ্যে আপত্তি আবেদন জমা পড়েছে ১২৬টি; ৬০টি পড়েছে বর্তমান সীমানার পক্ষে।

“৩০০ আসনের বর্তমান সীমানা অক্ষত রেখে আমরা প্রাথমিক খসড়া দিয়েছি। এখন কতগুলো আসনে আবেদন পড়েছে সেটা বাছাই করার পর বলা যাবে। আলোচনার পর শুনানি হবে। জুনের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। শুনানি শুরু করার তারিখ এখনও হয়নি।”

আরপিও নিয়ে আবার সভা

নির্বাচনী আইনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আরপিও নিয়ে কেবিনেটে আলোচনা হয়েছে। তবে সর্বশেষ তথ্য তারা জানেন না।

“মিনিটস পাইনি। তাই বলতে পারছি না, কী হয়েছে। কেবিনেটে চূড়ান্ত হয়নি, হয়ত আরও সভা হবে। এরপর বৈঠকের মিনিটস আসবে। তখন আমরা বলতে পারব যে এই পাঠিয়েছেন, এরপর চূড়ান্ত হবে।”