রোববার হরতাল ‘সফল করার জন্য’ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
Published : 29 Oct 2023, 12:50 AM
সরকার ‘মাস্টার প্ল্যান’ করে হামলা চালিয়ে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল ও আশপাশের এলাকাজুড়ে প্রাণঘাতি সংঘাতের পর রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “গ্রেপ্তার করে, বাস, ট্রেন, লঞ্চ পারাপার বন্ধ করে দিয়ে সরকার আমাদের মহাসমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। তারা যখন দেখেছে, বাধা উপেক্ষা করে লাখ লাখ লোক মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছে, তখন তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করে আমাদের মহাসমাবেশকে পণ্ড করে দিয়েছে।
“ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার সম্পূর্ণ মাস্টার প্ল্যান করে বিএনপির সমাবেশে হামলা করিয়েছে। আমি আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে শনিবার সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। ২০ শর্তে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ।
ঢাকার কাকরাইল মোড়ে সংঘর্ষের কারণে নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে দলটি।
শনিবার দুপুরে সমাবেশস্থল থেকেই হরতালের এ ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এরপর বিএনপি নেতারা মঞ্চ ত্যাগ করেন, সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায় এবং কাকরাইলের মোড় ও নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।
রাতে বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব নয়া পল্টনের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানান। একই সঙ্গে ‘হামলার’ প্রতিবাদে রোববার হরতাল ‘সফল করার জন্য’ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান রাখেন।
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেনের স্বাক্ষরে বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতিতে এও বলা হয়, “শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত তাণ্ডব ও সশস্ত্র হামলা নজিরবিহীন ও ন্যক্কারজনক। মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের ও পুলিশের বক্তব্যেরই প্রতিফলন বিএনপির সমাবেশে সশ্বস্ত্র ও রক্তাক্ত আক্রমণ।
“বেশ কয়েকদিন ধরে পুলিশের গণগ্রেপ্তার, হামলা এবং হুমকি ধামকি এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের লাঠি হাতে বিএনপির মহাসমাবেশ প্রতিহতের ঘোষণারই বাস্তবায়ন হয়েছে আজ।”
সংঘর্ষের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পাশাপাশি শামীম মোল্লা নামের এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।
শামীমের নিহত হওয়ায় ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “মানুষের ঢল যখন কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত গেছে, তখন পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠি নিয়ে, অস্ত্র নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। তারা গুলি করতে করতে, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ছুড়তে ছুড়তে নয়া পল্টনের কার্যালয় পর্যন্ত চলে আসে।
“পুলিশের টিয়ারশেল ও গুলির ঘটনায় সমাবেশের মঞ্চে বসা সিনিয়র নেতারা মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত ও আহত হয়।”
‘হামলায় সহস্রাধিক নেতাকর্মী’ আহত হয়েছেন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব কয়েকজন নেতার নামও উল্লেখ করেছেন, যাদের মধ্যে আছেন দলের চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।