এয়ারবাস কেনার পেছনে ‘কমিশন’, অভিযোগ ফখরুলের

“আমি বিমান মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি। আমি জানি, এয়ারবাস কেন কিনতে চায়। কারণ বোয়িং ফিডব্যাক দেয় না, কমিশন দেয় না,” বলেন বিএনপি মহাসচিব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2023, 01:13 PM
Updated : 22 May 2023, 01:13 PM

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ ‘কমিশন’ বলে অভিযোগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

সোমবার ঢাকার বনানীতে জ্বালানিবিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব এমন অভিযোগ করেন। এসময় তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে দুর্নীতির বিভিন্ন চিত্রও তুলে ধরেন।

বিএনপির সময়ের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশের বর্তমান খারাপ আর্থিক অবস্থা তুলে ধরে এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বিমান এমনিতে চলতে পারে না, পয়সা নাই, লস হতে হতে এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, বিমান চালানোর কোনো উপায় নাই। এখন নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে এয়ারবাস।

‘‘আমি বিমান মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি। আমি জানি, এয়ারবাস কেন কিনতে চায়। কারণ বোয়িং ফিডব্যাক দেয় না, কমিশন দেয় না। এয়ারবাস কমিশন দেয়। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, এয়ারবাস কমিশন দেয় কিন্তু বোয়িং কোনো কমিশন দেয় না। একারণে বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে।”

বিমান বাংলাদেশের পর্যদে সম্প্রতি বিদ্যমান বহরের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে নতুন ১০টি এয়ারবাস কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সংবাদমাধ্যমকে ফ্রান্সভিত্তিক এয়ারবাসের দুটি কার্গো উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে জানান। সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায় থেকেও কার্গো উড়োজাহাজ কেনার কথা বলা হয়।

Also Read: ‘ন্যাড়া বার বার বেলতলা যায় না’, ভোট নিয়ে ফখরুল

এমন সরকারি পদক্ষেপের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘‘কালকে (রোববার) দেখলাম বিমানের এমডি বলছেন, দেশের স্বার্থ চিন্তা করে কেনা হচ্ছে। দেশের স্বার্থ চিন্তা করলে যেগুলো আছে সেগুলোকে এফিসিয়েন্টলি চালানোর চেষ্টা করেন। সেগুলো তো করছে না।

“নতুন ড্রিমলাইনার নিয়ে এসেছেন, এমন হ্যান্ডলিং করেন যে, অন্য প্লেন ওটাকে মেরে দিয়ে এক বছর পড়ে থাকে, দু্ই বছর পড়ে থাকে। এটাই বাস্তবতা।”

তার অভিযোগ, ‘‘আজকে তাদের (সরকার) একটাই লক্ষ্য কীভাবে চুরি করবে, কীভাবে দুর্নীতি করবে। তারা গোটা বাংলাদেশকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। আরও পাঁচ বছর লুট করতে চায়। সেজন্য এখন তারা ভোট চাইতে শুরু করে দিয়েছে।

‘‘আওয়ামী লীগের যে বডি কেমিস্ট্রি সেই কেমেস্ট্রি থেকে দুইটা জিনিস বেরিয়ে আসে। একটা হচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে সন্ত্রাসী আর আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে দুর্নীতিবাজ। এত দুর্নীতিবাজ যে, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭৩-৭৪ সালে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নাম পরিবর্তন করে এটার নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি।”

ঢাকার গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলের সভাকক্ষে বিএনপি সমর্থক প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (অ্যাব) এর উদ্যোগে ‘দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা: লুটপাট আর অরাজকতার চালচিত্র’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ।

অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু এর সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব কে এস আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ইউনিভারসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাবের আশরাফউদ্দিন বকুল, একেএম জহিরুল ইসলাম, মোস্তফা-ই জামান সেলিম, অধ্যাপক এসএম আবদুর রাজ্জাক, মাহবুব আলম, শামীম রাব্বী সঞ্জয় বক্তব্য রাখেন।