ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।
Published : 09 Dec 2023, 06:39 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই করে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আদেশের বিরুদ্ধে ৫৬১টি আপিল জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা যে ৭৩১টি মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছিলেন সেগুলোর বিরুদ্ধে সাড়ে পাঁচশটির মতো আবেদন করা হয়েছে। বাকিগুলো জমা পড়েছে বৈধ ঘোষিত প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণার দাবিতে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এবার সারাদেশে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ২ হাজার ৭১৬টি। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাচাইবাছাইয়ে এগুলোর মধ্যে বাদ পড়ে যায় ৭৩১টি।
বাদ পড়াদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ৪২৩ জন, যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ‘দল নিরপেক্ষ’ প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন।
দলীয় প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭ জন কাটা পড়েছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের। জাতীয় পার্টির ৩০ জন এবং তৃণমূল বিএনপির বাদ পড়েছেন ২৪ জন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চার জন, গত নির্বাচনে নৌকা নিয়ে লড়াই করা বিকল্প ধারার দুই জনের মনোনয়নপত্রও বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
বিএনপি-জামায়াতের ভোট বর্জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সংসদীয় আসনগুলোতে ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছিল। তবে এক শতাংশ ভোটারের আগাম সমর্থনের প্রমাণ দিতে না পারার ঘটনায় তাদের বড় অংশ বাদ পড়ে যাওয়ায় লড়াইয়ের আমেজে অনেকটাই ভাটা পড়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত দৃশ্যত মেনে নিয়েছেন ১৮১টি আসনের নেতারা। এদের মধ্যে কয়জন দলীয় এবং কয়জন স্বতন্ত্র তা প্রকাশ পায়নি এখনও। একইভাবে যারা আপিল করেছেন, তাদের মধ্যে কয়জন স্বতন্ত্র আর কয়জন দলীয় প্রার্থী, সেটিও তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ ছিল ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বর। এই আপিলে কেবল প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আবেদন করা যায়- এমন নয়, বৈধ ঘোষিত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদনও করা যায়।
শনিবার আপিলের শেষদিনে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, “১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।”
নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুকে তলব করার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “ঝালকাঠি-২ আসনের একজন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে রিটার্নিং অফিসার প্রতিবেদন দিয়েছেন। সেই ভিত্তিতে তাকে (আমু) আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় সশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।”
রোববার বিএনপির মানবন্ধন কর্মসূচির অনুমতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের করণীয় আছে কি না- এই প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম দেখভাল করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা সেখান থেকেই গণমাধ্যমকে জানতে হবে।”
আগামী ২৯ ডিসেম্বর হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ডাক নিয়ে জাহাংগীর বলেন, “বিষয়টি আমার পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করব। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কমিশন যদি মনে কোনো সাজেশন দেওয়ার প্রয়োজন আছে, তাহলে সেটা করবে।”
যেসব রাজনৈতিক দল বা সংগঠন নির্বাচনের বাইরে আছে, তারা যদি সভা সমাবেশ করে তাহলে সেটি দেখা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে পড়ে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী যে কোনো কার্যক্রম অবশ্যই নির্বাচন পরিপন্থি হিসেবে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে যে প্রচলিত বিধি-বিধান ও আইন আছে, তা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে।”