সব বিভাগে বিএনপির সমাবেশ ৪ ফেব্রুয়ারি

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। কোন রাষ্ট্রপতি? যে রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই সেই রাষ্ট্রপতি।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2023, 02:31 PM
Updated : 25 Jan 2023, 02:31 PM

বিভাগে বিভাগে সমাবেশ কর্মসূচির প্রায় দুই মাসের মধ্যে এবার ১০ দফা দাবি আদায়ে একযোগে সব বিভাগে একইদিনে সমাবেশ করবে বিএনপি।

আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দলটির ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় ইউনিটে এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; যেটি সরকার হঠাতে জোটবাধা সমমনা রাজনৈতির দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি।

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একপাশের সড়কে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এর আগে বিএনপি নির্বাচনের বছর খানেক আগে দেশের বিভাগে বিভাগে সমাবেশ শুরু করেছিল গত অক্টোবরে। বিভিন্ন বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে সমাবেশ শেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করে দলটি। স্থান নির্বাচন ও অবস্থানের ঘোষণার মধ্যে যা তখন রাজনীতিতে উত্তাপ তৈরি করেছিল।

এদিন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে ২৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসে’ এ সমাবেশ আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ইউনিট। ঢাকা ছাড়াও অন্য ৯টি সাংগঠনিক মহানগর ইউনিটে এ কর্মসূচি হয়।

কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘‘আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমনপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, বিদ্যুৎ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী বিভাগীয় সমাবেশ হবে।”

এর আগে একই দাবিতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ২৪ ডিসেম্বর ৯ বিভাগীয় শহরে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল, ১১ জানুয়ারি অবস্থান কর্মসূচি এবং ১৬ জানুয়ারি বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে।

বুধবারের সমাবেশে আন্দোলন চলমান থাকবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে না যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা আমাদের বন্দি ভাইদের মুক্ত করতে পারছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের নেতা রুহুল কবির রিজভী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ অগণিত নেতাদের মুক্ত করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।”

‘রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে’

বর্তমান রাষ্ট্রপতি ‘নিরপেক্ষভাবে’ দায়িত্ব পালন করতে পারেন না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। কোন রাষ্ট্রপতি? যে রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই সেই রাষ্ট্রপতি।

‘‘আমরা রাষ্ট্রপতির আসনটাকে খুব সন্মান করি। যেই থাক, যে হোক, যে দলের হোক রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান; শিরোধার্য। এই রাষ্ট্রপতি কি তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন? তিনি কি আওয়ামী লীগের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কথার বাইরে একটা কাজ করতে পারেন? তিনি কি নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করতে পারেন? তিনি কি একটা আইন পরিবর্তন করতে পারেন? পারেন না।”

এসব কারণে ২৭ দফা দাবিতে বিএনপি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনার প্রস্তাব করেছে।

‘এদের যেতে হবে’

‘গণতন্ত্র হত্যার’ জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘এদেরকে (আওয়ামী লীগ) যেতে হবে। এদের সময় হয়ে গেছে, এবার এদের যেতে হবে।”

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে নয় শুধু ‘নিজেদের বিশ্বাস করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ‘ইস্পাতকঠিন গণঐক্য সৃষ্টি করে’ এ সরকারকে বিদায়ের আহ্বান জানান।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও শেখ রবিউল আলম রবি, মহানগরের ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়াল ও নবী উল্লাহ নবী, যুবদলের মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের আমিনুল হক সঞ্চালনা করেন।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক, শাহজাদা মিয়া, মীর সরাফত আলী সপু, নাসির উদ্দিন অসীম, নিলোফার চৌধুরী মনি, সাইফুল আলম নিরব, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ উপস্থিত ছিলেন।

Also Read: গণঅবস্থান থেকে বিএনপির মিছিল-সমাবেশের নতুন কর্মসূচি