গণঅবস্থান থেকে বিএনপির মিছিল-সমাবেশের নতুন কর্মসূচি

আগামী ১৬ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশে মিছিল-সমাবেশ করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2023, 09:36 AM
Updated : 11 Jan 2023, 09:36 AM

‘সরকার হটানোর যুগপৎ আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে গণঅবস্থান কর্মসূচির পর ১০ দফা দাবিতে আগামী ১৬ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশে মিছিল-সমাবেশের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

বুধবার ঢাকায় সাড়ে তিন ঘণ্টার গণঅবস্থান কর্মসূচি শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, পূর্বপ্রান্তে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, আরামবাগের ইডেন কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণফোরাম, বিজয়নগরের পানির ট্যাংকের কাছ থেকে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে সমমনা জাতীয়তাবাদী জোট এবং কাওরান বাজারে এফডিসির কাছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এলডিপিও আলাদা আলাদাভাবে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে।

জামিনে মুক্তি পাওয়ার দুই দিনের মাথায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এ কর্মসূচিতে যোগ দেন। নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, “আগামী ১৬ জানুয়ারি ১০ দফা দাবি আদায় এবং বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবিতে সারাদেশে সকল মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌর সদরে সমাবেশ ও মিছিল হবে। ঠিক আছে তো?”

কর্মীরা এ সময় করতালি দিয়ে দলের নতুন এই কর্মসূচিতে সমর্থন দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা কি ওভারকাম করব? জয়লাভ করব? আমরা কি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফিরিয়ে আনব? আমরা কি তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনব? আমাদের ভাইয়েরা যারা আজকে কেন্দ্রীয় কারাগারে, কাশিপুরে, কেরানীগঞ্জসহ সারাদেশের কারাগারে আছে, তাদেরকে কি মুক্ত করব? ইনশাল্লাহ আমরা সবাই আমাদের সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবই।”

সরকারের পদত্যাগ, একাদশ সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে, এটি ছিল তার দ্বিতীয় কর্মসূচি। গত ২৪ ডিসেম্বর ৯ বিভাগীয় শহরে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথম কর্মসূচিতে গণমিছিল করেছিল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

Also Read: যুগপৎ আন্দোলন: ‘গণ অবস্থানে’ বিএনপি ও সমমনারা

বুধবার গণঅবস্থানে যোগ দিতে বিএনপিকর্মীরা সকাল থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে একপাশে পলিথিন ও মাদুর বিছিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা।

ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আব্দুল কুদ্দুস, আফরোজা খানম রীতা, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচির কার্য্ক্রম শুরু হয় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। এরপর দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন জাসাস শিল্পীরা।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।

ফকিরাপুর থেকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত সড়কের একপাশে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচি সমাবেশের রূপ পায়। ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার’– ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা সরব করে রাখেন তারা।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহীতে আবদুল মঈন খান, সিলেটে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরিশালে সেলিমা রহমান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, রংপুরে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে কুমিল্লায় বরকত উল্লাহ বুলু ও খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু এবং ফরিদপুরে আহমেদ আজম খান অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।

ঢাকায় এই গণ-অবস্থান কর্মসূচির জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশের অনুমতি পায় বিএনপি। জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, সেজন্য সড়ক অবরোধ না করে ফুটপাতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছিল সেখানে।

গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে নয়া পল্টনের পুরো এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সতর্ক অবস্থান নেয়। কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড়ে জলকামানের গাড়ি দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।