ফারুক বলেন, “সংসদে ডানে আর বামে, ডামি আর ভাই, তারাই সরকার।“
Published : 12 Feb 2024, 01:46 PM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘তেলেসমাতি’ সংসদ আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক।
তার ভাষায়, এ সংসদে সরকারি ও বিরোধী দল আসলে ক্ষমতাসীনদের ‘এ ও বি’ টিম।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফারুক বলেন, “সংসদ চলছে, আজও চলবে। এটা একটা তেলেসমাতি সংসদ। মুরুব্বিরা বলেন, এটা আওয়ামী লীগের ‘এ’ টিম আর ‘বি’ টিম। এই সংসদে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই, এই সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই।
“তবুও এই সরকার ক্ষমতার জোরে নির্বাচন কমিশনের কারচুপিতে ক্ষমতায় বসে গত মাসের ১০ তারিখে শপথ নিয়ে সরকার গঠন করেছে।”
নবম সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, “এই সংসদে নাকি একটা বিরোধী দল আছে, তাও ১১ জনের; সেটাও বানিয়ে দিছে বর্তমান সরকারপ্রধান। আমি বলেছি না, ডানে আর বামে ডামি আর ভাই, তারাই সরকার।
“আবার আওয়ামী লীগের বদন্যতার কারণেই আজকে সংসদ বিরোধী দল তৈরি হয়েছে। এই বিরোধী দল দিয়ে বাংলাদেশের সার্বিক সমস্যার সমাধান হবে না। অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, তাকে সোজা করতে এই সরকার পারবে না। মুরুব্বিরা বলেন, এই সংসদ টিকে থাকতে পারে না। জনগণ বলে, এই সংসদ আর টিকে থাকার কথা নয়।”
কারাগারে বিএনপির ১৫ নেতা-কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ফারুক বলেন, “যে দেশে মানবাধিকার নাই, সেই দেশের সরকারের কারা কর্তৃপক্ষের কথা আমরা বিশ্বাস করতে পারি নাই। আমরা বিএনপি মনে করি, বাংলাদেশের কারাগারে যে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছেন তার হিসাব-নিকাশ একদিন আপনাদের দিতে হবে।”
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকারকে দায়ী করে ফারুক বলেন, “বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হচ্ছে, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে, সেখানে নতুন সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজ-রসুন-চাল-ডাল-চিনির দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে।
“বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর কথা শুনছেন না? আবার তারা সচেতন হচ্ছে, তড়িৎগতিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা কীভাবে রোজগার করা যায়।”
সাগর-রুনি হত্যার বিচার প্রসঙ্গ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের সমালোচনা করেন ফারুক।
তিনি বলেন, “সাগর-রুনি হত্যার ঘটনা, সেদিন আমি সংসদে ছিলাম, সেদিন সাহারা খাতুন (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগর-রুনির বিচার করবেন, তদন্ত করবেন, চার্জশিট দেবেন। লজ্জা হয় না, শরম লাগে না। আইনমন্ত্রী আপনি বলেছেন, ৫০ বছর লাগবে। যদি শরম থাকত, জনগণের ভোটে নির্বাচিত মন্ত্রী হতেন, এই কথা কোনোদিনও বলতে পারতেন না। আপনার লজ্জা হওয়া উচিত ছিল, আপনার বক্তব্যের পরের দিন ডিআরইউতে (ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি) সাংবাদিকরা বিক্ষোভ করে সেদিন আপনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। আপনি পদত্যাগ করেন নাই।”
জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ‘একতরফা’ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এসএম আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক গাফফার হোসেন ডিপটির সঞ্চালনায় বিএনপির আবদুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, তাইফুল ইসলাম টিপু, এজমল হোসেন পাইলট, কৃষক দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, জাহাঙ্গীর আলম, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক পরিষদের জাহাঙ্গীর চৌধুরীসহ আরও অনেকে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।