‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞা ‘সন্ত্রাসীদের উৎসাহী করবে’ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 13 Dec 2021, 04:41 PM
সোমবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজয়ের মাসে এই নিষেধাজ্ঞা কি নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন কি না? এমন প্রশ্ন করা হয় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে।
জবাবে তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্রের বিষয় তো অবশ্যই আছে। আমি বলেছি, আমাদের এই বিজয়ের মাসে যুক্তরাষ্ট্রের যে বক্তব্য, সেটা আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক এবং সন্ত্রাসীদের উৎসাহী করবে। মূল কথা হচ্ছে এটা।”
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়বে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “র্যাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে বক্তব্য দিয়েছে তা নিয়ে গতকাল দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। এ নিয়ে আমরা ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না।
“এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমাদের নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের নির্বাচন আমরাই করব, এখানে কি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে নির্বাচন করব?”
রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আগে র্যাব ও সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সিদ্ধান্তে ‘বিস্মিত এবং ব্যথিত’ হওয়ার কথা জানান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।
এই তালিকায় র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমদের সঙ্গে কক্সবাজারে র্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতা উদ্দিন আহমেদের নাম এসেছে।
এছাড়া আলাদাভাবে বিভিন্ন দেশের ১২ কর্মকর্তার নাম যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করার কথা বলেছে সে দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর।
সেখানে রাখা হয়েছে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাব, এর সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক ও বর্তমান আরও পাঁচ কর্মকর্তার নাম।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা মুজিববর্ষে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাদের সংবর্ধনা কর্মসূচির বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চান।
আগামী মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “অনেক কাজ হয়ে গেছে। লেখা সংগ্রহ করা, জেলা পর্যায় থেকে প্রবীণ তালিকা নেওয়া হয়ে গেছে। এখন আমাদের সুবিধামতো সময়ে মার্চের মধ্যে আয়োজন করব।”
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্রধানমন্ত্রীর পরিচালনায় একটি শপথ অনুষ্ঠান হবে জানিয়ে তাতে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
এসময় তিনি জানান, আগামী ১৮ ডিসেম্বর একটি বিজয় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। শিখা চিরন্তন থেকে শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত যাবে।
১১ ও ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। এছাড়া ১৩ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী লোকজ উৎসব হবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ওয়াসিকা আয়শা খান, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, আবদুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান।
আরও পড়ুন