সংলাপের আহ্বানে সরকারকে চিঠি দেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে সরকারকে চিঠি দিতে যাচ্ছে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2018, 04:33 PM
Updated : 21 Oct 2018, 04:36 PM

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাতের সময়সূচি ঠিক হওয়ার পরপরই রোববার জোটের এক বৈঠকের পর জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, “সরকারকে আমরা দাবি জানাব তফসিল ঘোষণার পূর্বে বৈঠক করার জন্য। আমরা যারা অংশীজন, আমরা যারা নির্বাচন করতে চাই, তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা না করে যেন তফসিল ঘোষণা না করা হয়।

“সেজন্য আমরা ৭ দফা দাবি সরকার ও সরকারি দলকে চিঠি দিয়ে জানাব।”

সংসদ ভেঙে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনে সাত দফা দাবি তুলেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যে জোটে বিএনপিও রয়েছে।

তাদের দাবি ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই জোট গঠনের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করছেন দলটির নেতারা।

সরকারের পাশাপাশি দাবিনামা নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল যাবে বলে জানিয়েছেন রব।

কবে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলকে চিঠি দেবেন- জানতে চাইলে রব বলেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্যাডে লিখিতভাবে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করে আমাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে চিঠি  যাবে। তবে কবে দেওয়া হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি।”

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আগামী ১ নভেম্বর ইসির বৈঠকের সময়  নির্ধারিত হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম ভাগে তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় চলছে ইসিতে।

রব বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মুক্তি দাবি করেন। তথ্য প্রযুক্তি আইনের এক মামলায় রোববার খসরুকে কারাগারে পাঠায় চট্টগ্রামের একটি আদালত।

রব বলেন, “সিলেটের জনসভার আগেই তার মুক্তি দাবি করছি।”

লেইক শোর হোটেলে বৃহস্পতিবার কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন ও আ স ম আবদুর রব।

গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর আগামী ২৪ অক্টোবর সিলেটে রেজিস্ট্রি মাঠে প্রথম জনসভাটি হচ্ছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন এবং প্রধান বক্তা থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

জনসভার অনুমতি নিয়ে পুলিশের গড়িমসির দিকে ইঙ্গিত করে রব বলেন, “আমরা বলেছিলাম, যে কোনো উপায়ে সিলেটে যাবই। আমাদের যাওয়ার ঘোষণায় সরকার বুঝেছে- বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই। এটা বুঝতে পেরে সরকার জনসভার এই অনুমতি দিয়েছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, তাদের এই শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ার জন্য।”

একইভাবে আগামী ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রামে এবং ২ নভেম্বর রাজশাহীতে জনসভার অনুমতিও মিলবে বলে আশা করছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা।  

রব জানান, নাগরিক সমাজ-বুদ্ধিজীবী-পেশাজীবীদের সঙ্গে আগামী ২৬ অক্টোবর পূর্বাণী হোটেলে মতবিনিময় করবেন তারা।

মতিঝিলে কামাল হোসেনের দল গণফোরামের কার্যালয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে আসেন রব।

আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠকে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মনিরুল হক চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব।

জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর নেতাদের মধ্যে ছিলেন জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহীদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোকাব্বির খান, আ ও ম শফিক উল্লাহ, মোশতাক আহমেদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, আ ব ম মোস্তফা আমিন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, মমিনুল ইসলাম, জাহেদুর রহমান প্রমুখ।

বৈঠকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরীও  ছিলেন।