কামাল হোসেনের সামর্থ্য জানা আছে: তোফায়েল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর বিএনপি আন্দোলন চাঙা করার আশা করলেও তাতে কোনো লাভ দেখছেন না বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2018, 10:59 AM
Updated : 19 Oct 2018, 11:02 AM

কামাল হোসেনের নির্বাচনী ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেছেন, “ড. কামাল হোসেন এখন বিএনপির দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু আমরা তার সামর্থ্য সম্পর্কে জানি, কারণ তিনি এক সময় আমাদের সাথেই ছিলেন।

“তিনি বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া আসনে নির্বাচন করে জিতেছিলেন। ‘৮৬ সালে কিংবা ’৯১ সালের নির্বাচনে নৌকা নিয়ে হেরেছিলেন।”

শুক্রবার বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একথা বলেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে ব্যর্থ বিএনপি গত সপ্তাহে কামাল হোসেনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হয়েছে। তারা আশা করছে, সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে এবার গতি আসবে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল বলেন, “কিছু নীতিবান লোক, যারা সব সময় নীতির কথা বলে এখন তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা বলছে। গণতন্ত্র মানে কি ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা? ২০১৩ সালের মতো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা? পেট্রোল বোমা মারা, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা?”

কূটনীতিকদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের মতবিনিময়ের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “তারা আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে ভাবছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর কোনো কাজ নেই যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বসে থাকবে।”

বিএনপিসহ সরকারবিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে তোফায়েল আবারও বলেন, সংবিধান অনুসরণ করেই নির্বাচন হবে এবং তাতে কেউ না হলেও কোনো সমস্যা হবে না।

“কেনিয়ার নির্বাচন হয়েছে। প্রথম দফায় নির্বাচন হওয়ার পর বিরোধী দল হেরেছে। আবার নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু এবার আর বিরোধী দল আসেনি। নির্বাচন হয়ে গেছে। একইভাবে জিম্বাবুয়েতে নির্বাচন হয়েছে। বিরোধী দল বর্জন করলেও নির্বাচন হয়ে গিয়েছে।”

কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স দুই দিনব্যাপী ‘কোরিয়া শোকেস ২০১৮’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। কোরীয় প্রসাধনী, তৈরি পোশাক শিল্পের সরঞ্জাম, গাড়ির যন্ত্রাংশ ইলেক্ট্রনিক পণ্য স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে।

বক্তব্যে কোরিয়ার ব্যবসায়ীদেরকে এই দেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

“বাংলাদেশে কোরিয়ার অন্তত ৩০০ কোম্পানি ব্যবসায়িক কাজে যুক্ত আছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান এই দেশে ব্যবসা চালু করবে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। সামাজিক ও অর্থনীতির অগ্রগতির সুচকে প্রতিবেশি ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশ এগিয়ে।”

কোরিয়ান ব্যবসায়ীদেরকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি বাদশাহ সালমানও বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রশংসা করেছেন। একটি সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে অর্থনৈতিক উন্নতি যে কত ত্বরান্বিত হয় তিনি সেটাই বলতে চেয়েছেন।

তোফায়েল বলেন, “শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আজ এত উন্নত। তিনি পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, এলএনজি টার্মিনাল, কর্ণফুলি ট্যানেলসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।”

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থেমে যেতে পারে আশঙ্কা করেন তিনি।

গত ১০ বছরে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে তোফায়েল বলেন, “আগে গ্রামের মানুষ খালি পায়ে হাঁটতো। এখন শতভাগ টিনের ঘর, বিদ্যুতের আলোয় উজ্জ্বল, রাস্তাঘাট পাকা, পায়ে জুতা-গায়ে সুন্দর জামা। এক হাতে চায়ের কাপ, আরেক হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে গ্রামের মানুষ টিভি দেখছে। এটিই এখনকার চিত্র।”

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ঢাকায় কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু ক্যাং ইল, কোরিয়া বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।