বিএনপি-জামায়াতকে আনতেই জোটের ৭ দফার ঘোঁট: ইনু

বিএনপি-জামায়াতসহ রাজাকার ও জঙ্গিদের ‘রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফার প্রস্তাব হাজির করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2018, 04:19 PM
Updated : 14 Oct 2018, 04:19 PM

বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পরদিন রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসেন জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী ইনু।

তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে হয় দুর্নীতি নয় হত্যা-খুনের মামলা, মানুষ পোড়ানোর মামলা না হলে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের লালন করা ও পৃষ্ঠপোষকতা মামলাগুলো রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ঐক্যটা আমরা দেখছি।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে একটি ‘অস্বাভাবিক সরকার’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে বলে দাবি করে নির্বাচনের দুই মাস বাকি থাকতে ফ্রন্টের প্রস্তাব কার্যকর করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট শরিক দলের এই নেতা।

তিনি বলেন, “সাত দফার সার কথা হচ্ছে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে ভোটের আগে একটি অস্বাভাবিক সরকার আনা, যার কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই।

“বিএনপি, জামায়াত এবং ড. কামাল হোসেনরা কোনো স্বাভাবিক পরিস্থিতি চাচ্ছেন না। ১০টা বছর গেল, ১০টা বছরে তারা একটা নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা তৈরি করলেন না কেন? নির্বাচনের দুমাস আগে, দুদিন আগে আপনি একটা প্রস্তাব হাজির করছেন যেটা কার্যকর করা সম্ভব নয়।”

কামাল হোসেন ও বিএনপির পক্ষ থেকে ঐক্য ফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ দফাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘কিছু জিনিস’ সংযোজন ও বিয়োজন করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।

“রাজনীতিতে বিএনপি, জামায়াত, রাজকার, জঙ্গি ও সব অপরাধীকে হালাল করার প্রস্তাব হচ্ছে সাত দফার প্রস্তাব। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধাপরাধকে সাথে নিয়ে স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের সাথে নিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের ঘোষণা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাতির সঙ্গে একটা ঠাট্টা-মসকরা।”

ইনুর ভাষ্য, “৭ দফা ও ১১ দফার লক্ষ্যের আড়ালে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতবাজদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার একটা প্রকল্প, অস্বাভাবিক সরকার আনার প্রস্তাব, গণতন্ত্রকে জিম্মি করে সব ধরনের অপরাধীদের মুক্ত, পুনর্বাসন ও রাজনীতি করার একটা ব্যবস্থা।

“এটা জোট নয় এটা ঘোঁট। এই ঘোঁট পাকানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে যাচ্ছে।”

ইনুর মতে বিএনপির সঙ্গে রাজাকারদের সম্পৃক্ততা, বিএনপির জঙ্গি-সন্ত্রাস ও হত্যা-খুনের ‍পৃষ্ঠাপোষকতা, সংবিধানের চার নীতিতে বিএনপি অস্বীকার, ৩০ লাখ শহীদ ও একাত্তরের গণহত্যাকে বিএনপির বিতর্কিত করা এবং জাতির পিতা ও স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিএনপির ন্যাক্কারজনক ও বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট  ‘নীরব’ ভূমিকা পালন করছে।

“আমি মনে করি, সাত দফার প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে যারা একত্রিত হয়েছেন তারা শেখ হাসিনার সরকারকে মাইনাস করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন এবং রাজাকার, বিএনপি, জঙ্গি ও অপরাধীদের রাজনীতিতে প্লাস করার একটা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন; এটা জাতির জন্য ও রাজনীতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

“আমি মনে করি, বিএনপি হচ্ছে রাজকার, জঙ্গি ও জামায়াতের আশ্রায়ন প্রকল্প ও সংস্থা। ড. কামাল হোসেন এই জঙ্গি-সন্ত্রাসী বিএনপির আশ্রায়ন প্রকল্প হিসেবে ভূমিকা রাখা শুরু করেছেন।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন,  “বিএনপি কামাল হোসেনকে রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে আর ড. কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের মধ্য দিয়ে জামায়াত রাজাকারের সঙ্গে সংসার করতে শুরু করল। এর সঙ্গে দেশ, জাতি, জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই, গণতন্ত্রেরও কোনো সম্পর্ক নেই।”

বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই দাবি করে ইনু বলেন, “যারা কারাগারে আছেন তারা হত্যা, খুন, নারী ধর্ষণ, মানুষ পোড়ানো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, একুশে অগাস্টে হত্যা, দুর্নীতি, নারী নির্যাতনের কারণে কারাগারে আছেন।

“আমি পরিষ্কার করে বলছি, বাংলাদেশে কোনো রাজবন্দি নেই, যারা আছে সব অপরাধী। খালেদা জিয়া একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারেক একটা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, খুনি অপরাধী।”

আরও খবর